নরেন্দ্র মোদী ও দিব্যেন্দু অধিকারী ফাইল চিত্র।
আচমকাই দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার বেশি রাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন রেসকোর্স রোডে মোদীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেছেন দিব্যেন্দু। যা নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে আবার জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ, দিব্যেন্দুর দাদা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সামগ্রিক ভাবে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রায় অনতিক্রম্য এক ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছে। শুভেন্দু-দিব্যেন্দুর বাবা প্রবীণ রাজনীতিক তথা কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠিও লিখেছে তৃণমূল।
দিব্যেন্দু নিজে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওই বৈঠক নিয়ে কিছু বলতে চাননি। বস্তুত, তিনি বৈঠকের কথা উড়িয়েই দিয়েছেন। তবে সূত্রের খবর, বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলায় যথাসম্ভব দ্রুত এবং যথাসম্ভব বেশি করোনার টিকা পাঠানোর আর্জি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছেন তমলুকের সাংসদ। পাশাপাশিই জাল ভ্যাকসিন-কাণ্ড নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে এর কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন কোনও তরফেই মেলেনি। সাক্ষাৎ সেরে গভীর রাতেই দিল্লি থেকে ফিরে এসেছেন দিব্যেন্দু।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই কাঁথির অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল তৃণমূলের। শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর যা আরও বাড়ে। তার পর বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দু-দিব্যেন্দুর ভাই সৌম্যেন্দু। অধিকারীর পরিবাবের কর্তা শিশিরও কাঁথিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় গিয়ে হাজির হন। ফলে বিজেপি-র শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে অধিকারী পরিবারের ‘ঘনিষ্ঠতা’ আগে থেকেই ছিল। তার ফলেই তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর সেই দূরত্ব আরও বেড়েছে। শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হওয়ায় দু’পক্ষের লড়াই আরও প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সেই আবহেই মোদীর সঙ্গে দিব্যেন্দুর সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক ভাবে দিব্যেন্দু এখনও তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। যেমন শিশির কাঁথির তৃণমূল সাংসদ। শিশিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লোকসভার স্পিকারকে আবেদন জানালেও দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি তৃণমূল। কারণ, তাঁকে প্রকাশ্যে বিজেপি-র কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে দেখা যায়নি। একজন সাংসদ হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন বিষয়ে আগেও চিঠি লিখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি অনুষ্ঠানে যোগও দিয়েছেন। কিন্তু তা ছিল নেহাতই সরকারি কর্মসূচি। ফলে দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও ‘রাজনৈতিক’ কারণে অভিযোগ আনা যায়নি। তবে মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর একান্ত বৈঠককে তৃণমূল কী নজরে দেখে, সেটিই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy