কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৫ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূল সাংসদ শুক্রবার জানিয়েছেন, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)-র পক্ষ থেকে বার্তা পেয়েছেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে ৫৫ লক্ষ টাকা জমা (ক্রেডিট) করা হয়েছে। সেই টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, না কি ব্যাঙ্ক ক্ষতিপূরণ দিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কল্যাণ জানিয়েছেন, সাংসদ বলেই এই টাকা হয়তো পেয়েছেন। সাধারণ মানুষের অবস্থা কী হতে পারে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কল্যাণ।
কল্যাণ জানিয়েছেন, এসবিআইয়ের পার্লামেন্ট শাখায় তাঁর যে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেখান থেকে টাকা বিধানসভার উপশাখা অ্যাকাউন্টে ফেলা হয়। তার পরে তছরুপ হয়। ব্যাঙ্কের তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, ৫৫ লক্ষ টাকা ক্রেডিট হয়েছে। ব্যাঙ্ক সাইবার অপরাধ দমন শাখায় অভিযোগ করেছে। তার পরেই তিনি জানান, যে বা যারা এই চক্র চালাচ্ছে, তাদের ধরা হোক। তাঁর কথায়, ‘‘আজ মানুষ এবং ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমি এমপি বলে হয়তো টাকা ফেরত পেলাম। কিন্তু সাধারণ মানুষের কী অবস্থা ভাবুন!’’ তাঁর উদ্বেগ, কেউ মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা জমালে, তাঁর এ রকম ঘটলে কী হবে। তার পরেই তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তোলেন। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ইডি কে দিয়ে এত কিছু করাচ্ছে, ডিজিটাল জালিয়াতদের ধরতে কেন শাখা খুলছে না?’’
আরও পড়ুন:
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক ছিলেন কল্যাণ। সে সময়ে অন্য বিধায়কদের সঙ্গে তাঁর নামেও স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (এসবিআই) বিধানসভার উপশাখায় একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। ওই উপশাখা এসবিআইয়ের হাই কোর্ট শাখার অধীন। বিধায়ক হিসাবে পাওয়া তাঁর যাবতীয় ভাতা ওই অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত। কল্যাণ এখন সাংসদ। বিধানসভার ওই অ্যাকাউন্টে দীর্ঘ দিন তাঁর কোনও লেনদেন হয়নি। ফলে অ্যাকাউন্টটি ‘ডরম্যান্ট অ্যাকাউন্টে’ (দীর্ঘ দিন কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন না হলে ব্যাঙ্কের পরিভাষায় তাকে ডরম্যান্ট অ্যাকাউন্ট বলা হয়) পরিণত হয়েছে। অভিযোগ, সেই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই কারচুপি করেছে প্রতারকেরা।
সাংসদের দাবি, হাই কোর্ট শাখার ম্যানেজার বৃহস্পতিবার তাঁকে ফোন করে প্রতারণার খবর দেন। জানা গিয়েছে, সাংসদের ছবি এবং মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে পার্লামেন্ট শাখা থেকে ৫৫ লক্ষ টাকা প্রথমে বিধানসভার ডরম্যান্ট অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পরে সেখান থেকে পুরো টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।