রাজ্যসভায় কুড়মালি ও রাজবংশী ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তাঁর এই প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই স্পষ্ট জানিয়ে দেন—এই দুই ভাষাকে অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের। কেন্দ্রের এই জবাব প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ উগরে দেন যুবা তৃণমূল সাংসদ। প্রসঙ্গত পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী এলাকায় কুড়মালি এবং রাজবংশী ভাষায় কথা বলা মানুষের বাস। এই এলাকার মানুষের মন পেতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই দু’টি ভাষাকে রাজ্য সরকারের তরফে মর্যাদা দিয়েছেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এই দুই ভাষাভাষী সম্প্রদায়ের মানুষকে নিজেদের দিকে টানতে তৃণমূল সাংসদ সামিরুল এমন কৌশল নিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
সামিরুলের অভিযোগ, “এই উত্তর শুধু হতাশাজনক নয়, কুড়মি ও রাজবংশী ভাষাভাষী মানুষের প্রতি সরাসরি অবমাননা।” তিনি মনে করিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহু আগেই এই দুই ভাষাকে রাজ্যে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মানজনক মর্যাদা দিয়েছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রথিতযশা ব্যক্তিদের সম্মানিত করেও রাজ্য সরকার বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। কিন্তু বিজেপি-শাসিত কেন্দ্রের এই অস্বীকার, তাঁর দাবি অনুযায়ী, আবারও প্রমাণ করল যে “তারা মূলনিবাসী বিরোধী সরকার।”
এই ভাষার স্বীকৃতির লড়াই থামবে না বলেই হুঁশিয়ারি দেন সাংসদ। তাঁর বক্তব্য, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ভাষার অধিকার আদায়ের দাবিতে রাজপথ থেকে সংসদ—সব জায়গাতেই আন্দোলন জারি থাকবে। তাঁর কথায়, “আমাদের আত্মসম্মান ও সাংস্কৃতিক অধিকারের লড়াই আরও জোরদার হবে।’’ সামিরুল আরও বলেন, “বিজেপি সরকার মূলনিবাসী সমাজের ভাষা, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়কে সম্মান দিতে চায় না।” প্রসঙ্গত, কুড়মালি ও রাজবংশী ভাষার ভোটারদের একটি বড় অংশের ঝোঁক রয়েছে বিজেপির প্রতি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সেই ভোট নিজেদের বাক্সে আনাই লক্ষ্য বাংলার শাসকদলের। মনে করা হচ্ছে, রাজ্যসভার পথ ধরে সেই কৌশলের পথচলা শুরু হল।