Advertisement
০৫ মে ২০২৪
সভা ছাপিয়ে ভিড় এল রাস্তায়

পাল্টা সভা করে বিজেপি-কে কটাক্ষ তৃণমূলের

মঙ্গলবার দুর্লভপুর মোড় সংলগ্ন একটি মাঠে আয়োজিত বিজেপির সভায় পুলিশের হিসেবে লোক হয়েছিল, মেরে কেটে পাঁচ হাজার। শনিবার তৃণমূলের পাল্টা সভায় অন্তত কুড়ি হাজার লোক হয়েছে বলে দাবি করল পুলিশ।

সমাগম: গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুরে দলের মঞ্চে সাংসদ মানস ভুঁইয়া। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

সমাগম: গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুরে দলের মঞ্চে সাংসদ মানস ভুঁইয়া। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গঙ্গাজলঘাটি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৮
Share: Save:

বিজেপি-র পাল্টা কর্মসূচি তৃণমূলকেও নিতে হবে। এমনই নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা দলের জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ মেনেই গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুরে বিজেপি-র সভার চার দিনের মাথায় শনিবার পাল্টা সভা করল তৃণমূল। সভাস্থল ছাপিয়ে লোকজনের ভিড় আছড়ে পড়ল রাস্তাতেও। যা দেখে স্বভাবতই খুশি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি, না তৃণমূল, কাদের সভায় বেশি লোক হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেল এলাকায়।

মঙ্গলবার দুর্লভপুর মোড় সংলগ্ন একটি মাঠে আয়োজিত বিজেপির সভায় পুলিশের হিসেবে লোক হয়েছিল, মেরে কেটে পাঁচ হাজার। শনিবার তৃণমূলের পাল্টা সভায় অন্তত কুড়ি হাজার লোক হয়েছে বলে দাবি করল পুলিশ। আর জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান দাবি করছেন, “জেলার অন্য কোনও এলাকা থেকে লোক আসেনি। শুধুমাত্র শালতোড়া বিধানসভার কয়েকটি অঞ্চলের লোকই এ দিন এসেছিলেন। তাতেই ভিড় ছাড়িয়ে গিয়েছে পঞ্চাশ হাজার। তিন দিনের চেষ্টাতেই ঐতিহাসিক ভিড় হয়েছে সভায়।”

ভিড় দেখে তালড্যাংরার বিধায়ক সমীর চক্রবর্তীর কটাক্ষ, “বিজেপি হাজার চার-পাঁচেক লোক জড়ো করেই রাজ্য জয় করার স্বপ্ন দেখছে! আর কাতারে কাতারে মানুষ তৃণমূলের সভায় যোগ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাস্তবে বিজেপি গোল্লা ছাড়া আর কিছুই পাবেন না।”

এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, শ্যামল সাঁতরা, তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়া, সৌমিত্র খান, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান, দলের জেলা চেয়ারম্যান শ্যাম মুখোপাধ্যায়, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকে।

ব্রাত্য রাজ্যের বিরোধী দলের নেতাদের কটাক্ষ করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া ঝকঝকে রাস্তায় গাড়ি চড়ে ঘুরছেন বিরোধী দলের নেতারা। তাঁদের ছেলেমেয়েরা কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, সবুজশ্রীর সুবিধাও নিচ্ছেন। এত কিছুর পরেও মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করা বন্ধ করছেন না।”

তিনি দাবি করেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে শাসকদলের সঙ্গে এক মত না হতে পারলেই গুলি করে, কুপিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে লোকজনকে। বাংলায় মানুষ অনেক নিরাপদ রয়েছেন।

দুর্লভপুরে বিজেপি-র সভা মঞ্চ থেকে তৃণমূল ও পুলিশের নাম জড়িয়ে কয়লা, বালি ও পাথর পাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন নেতারা। এ দিন সেই অভিযোগের জবাব দেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

সভাধিপতি অরূপবাবু বলেন, “যে সব বিজেপি নেতা তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই সব মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন, তাঁরা নিজেরাই তো ওয়াগন ব্রেকার। ওই নেতাদের পেট কাটলে টন টন কয়লা, পাথর, বালি বের হবে।”

তৃণমূলের আমলে এই রাজ্যে শান্তি ফিরেছে বলে দাবি করেন মানসবাবু। তিনি বলেন, “সিপিএম তো বিরোধী নেতাদের খুন করত। হাত, পা কেটে জ্বালিয়ে দিত। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বাঁকুড়ার সিপিএম নেতা অমিয় পাত্রেরা রাস্তায় নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ান।” তিনি যুক্ত করেন, “বিজেপি ভাবছে ওরা বাঁকুড়ায় ফাঁকা মাঠে গোল দেবে। কিন্তু আমাদের এই জেলার নেতারা কম খেলোয়াড় নন। সাধারণ মানুষ রেফারির মতো দেখতে থাকুন, আমাদের খেলোয়াড়েরা কী ভাবে বিজেপিকে রুখে দেয়।”

তৃণমূলের এ দিনের সভাকে কটাক্ষ করে বাঁকুড়ার বাসিন্দা বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার দাবি করেন, “আমাদের দলের জনভিত্তি বাড়ছে। তা টের পেয়েই তৃণমূলের হাড়ে কম্পন শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই যেখানেই আমরা সভা করছি, পিছনে পিছনে তাঁরা ছুটছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE