Advertisement
E-Paper

বাঙালি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সই করা পরিচয়পত্র দেখিয়েও মহারাষ্ট্রে হেনস্থার মুখে মতুয়া পরিবার! নতুন অভিযোগ তৃণমূলের

এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপিশাসিত মহারাষ্ট্রের পুণেতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন মতুয়া যুবক আরুষ অধিকারী এবং তাঁর পরিবার।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৫ ১৮:০৬
পুণেতে হেনস্থার শিকার মতুয়া যুবক আরুষ অধিকারী ও তার পরিবার।

পুণেতে হেনস্থার শিকার মতুয়া যুবক আরুষ অধিকারী ও তার পরিবার। — নিজস্ব চিত্র।

বিজেপিশাসিত রাজ্যে আবার বাংলাভাষী পরিবার হেনস্থার মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ করল তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগ, হেনস্থার মুখে যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা মতুয়া। তাঁদের কাছে বৈধ পরিচয়পত্র ছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মতুয়া সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরের সই করা কার্ডও রয়েছে। তার পরেও তাঁরা মহারাষ্ট্রের পুণেতে পুলিশের হেনস্থার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে শান্তনু পাল্টা তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর দাবি, মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে যে আইন রয়েছে কেন্দ্রের, তা মানছে না তৃণমূল। বেছে বেছে মতুয়াদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট দিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপিশাসিত মহারাষ্ট্রের পুণেতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন মতুয়া যুবক আরুষ অধিকারী এবং তাঁর পরিবার। হাবড়ার ওই যুবক সেখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘হিংসার রাজনীতি কাউকেই রেয়াত করে না। বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের রোহিঙ্গা বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের কাছে পুণেতে ওই মতুয়া পরিবারের ছ’জনের হেনস্থা হওয়ার খবর এসেছে। সেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছেন, ওই পরিবার নিশ্চিত করেছে যে ‘বাংলাদেশি সন্দেহে’ তাদের আটক করেছে পুলিশ। আটকদের মধ্যে রয়েছে শিশুও। সামিরুলের কথায়, ‘‘স্তম্ভিত হওয়ার মতো বিষয় যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর নিজেও মতুয়া।’’ এর পরেই তিনি জানান যে, ওই মতুয়া পরিবারের কাছে আধার কার্ডের পাশাপাশি ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ’-এর (এআইএমএম) দেওয়া পরিচয়পত্র ছিল, যাতে সই ছিল খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর।

এই নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা মতুয়া নেত্রী মমতাবালা ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের স্বাক্ষর করা মতুয়া মহাসংঘের কার্ড থাকা সত্ত্বেও হাবড়া বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা মতুয়া সম্প্রদায়ের আরুষ এবং তাঁর পরিবারকে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দিয়েছে মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার।” এ বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু, কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মতুয়া সম্প্রদায়কে নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগও এনেছেন। সামিরুল পোস্টে লিখেছেন, ‘‘বিজেপির বিষাক্ত রাজনীতি সকলকেই নিশানা করছে। স্পষ্টতই তা আসলে বাঙালিবিরোধী।’’

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু যদিও পাল্টা আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের দিকে। শান্তনুর কথায়, ‘‘বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে যাঁরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য দেশে আইন রয়েছে। সেই আইনের নাম সিএএ। মতুয়ারা সবাই সেই সিএএ-র আওতায়। পশ্চিমবঙ্গের সরকার সে সব মানছে না। বেছে বেছে মতুয়াদের নাম ভোটার তালিকা থেকে কাটা হচ্ছে।’’ মতুয়া সঙ্ঘাধিপতি, বনগাঁর বিজেপি সাংসদের দাবি, ‘‘ভোটার তালিকা থেকে মতুয়াদের নাম বাদ দেওয়ার চক্রান্তের সঙ্গে জেলাশাসক, মহকুমাশাসকেরা যুক্ত। পুলিশ আর প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বনগাঁ, বাগদা, গাইঘাটা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মতুয়াদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কারণ এরা বিজেপিকে ভোট দেয়। বিজেপির ভোট কমাতে তৃণমূল মানুষের বৈধ নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে চাইছে।’’

উল্লেখ্য, গত বেশ কয়েক দিন ধরে অভিযোগ উঠছে, বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও বাংলা থেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন্‌রাজ্যে (বিশেষত বিজেপিশাসিত রাজ্যে) আটক করে রাখা হচ্ছে। বাংলাভাষী হলে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন্‌রাজ্যে হেনস্থার ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।

TMC motua Motua Community
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy