E-Paper

হেল্পলাইন থেকে বায়োমেট্রিক, শিল্পাঞ্চলে কড়া হচ্ছে তৃণমূল

অভিযোগ পাওয়া মাত্র শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ স্তর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতির জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে ওই সংস্থায় কাজ স্বাভাবিক না-হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫ ০৬:৩০

—প্রতীকী চিত্র।

খড়গপুর শিল্পাঞ্চলে একটি সংস্থার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানিয়েছিলেন, কর্মীদের একাংশ ‘গো স্লো’ করায় তাঁদের শিফ্‌টে উৎপাদনে ঘাটতি হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া মাত্র শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ স্তর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতির জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে ওই সংস্থায় কাজ স্বাভাবিক না-হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তাতে তিনি সভাপতি পদ হারাতে পারেন, প্রশাসনিক পদক্ষেপও হতে পারে। তাতেই কাজ হয়েছে।

এই ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন উদাহরণ নয়। রাজ্য জুড়ে শিল্পাঞ্চলগুলিতে সরকারের ‘শিল্প-বান্ধব’ ভাবমূর্তি স্পষ্ট করতে ধারাবাহিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। সেই লক্ষ্যে শ্রমিক সংগঠনের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণে রাখতেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নেওয়া হচ্ছে কঠোর অবস্থান। শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া কোনও সংস্থায় লোক নিয়োগ থেকে শুরে করে টাকা তোলার মতো কাজকর্মে শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যেন জড়িয়ে না থাকেন, তার জন্য বার্তা দেওয়া হচ্ছে রাজ্য জুড়ে। তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সংশ্লিষ্ট এলাকার কমিটি এবং শিল্প মহলের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাংসদ ও সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যার সূচনা হয়েছে তমলুক ও দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার কমিটি ভেঙে দিয়ে কোর কমিটি গঠন করে।

শাসক শিবির সূত্রের খবর, হলদিয়া ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতৃত্ব কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরে অন্যান্য জায়গা থেকেও শিল্প-সংস্থার প্রতিনিধিরা এগিয়ে এসে নানা অভিযোগ জানাতে শুরু করেছেন। তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, দুর্গাপুরে মন্ত্রীর ভাই ছাড় পাননি, অন্যায় থাকলে অন্যেরাও পাবেন না। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে অভিযোগ জানানোর সুবিধার্থে আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য নেতৃত্বের তরফে দেওয়া হচ্ছে একটি ওয়ট্‌সঅ্যাপ নম্বর (৬২৯২২ ৬২৪৬৩)। শিল্প-কারখানা সংক্রান্ত কোনও অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলার অভিযোগ কেউ এখানে বার্তা দিয়ে জানালে সংগঠনের তরফে যোগাযোগ করে নেওয়া হবে। অভিযোগকারী চাইলে পরিচয় গোপন রাখা হবে।

কেন এমন তৎপরতা? শাসক শিবির সূত্রের বক্তব্য, দলের তরফে এবং উপদেষ্টা সংস্থার মারফত সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, সংগঠিত শিল্প এলাকায় তৃণমূলের ফল গত বিধানসভা ভোটে ভাল হয়নি। হলদিয়া, দুর্গাপুর, আসানসোল, শিলিগুড়ির শিল্পাঞ্চলে বিধানসভা আসন হেরেছে শাসক দল। গত লোকসভা নির্বাচনেও এই সব এলাকায় ফল তৃণমূলের অনুকূলে যায়নি। শাসক নেতৃত্বের মতে, শিল্পাঞ্চলে নানা অশান্তি জিইয়ে রাখা এবং শ্রমিক সংগঠনের একাংশের ভূমিকার জেরে স‌ংগঠিত শিল্পের শ্রমিকদের সমর্থন তৃণমূল সে ভাবে পাচ্ছে না। বরং, কল্যাণমূলক বিভিন্ন প্রকল্পের সুবাদে অসংগঠিত শ্রমিকদের বিপুল অংশের সমর্থন মমতার দল পাচ্ছে। আগামী বিধানসভা ভোটের আগে তাই শিল্পাঞ্চলে ভাবমূর্তি ঠিক করতে বিশেয উদ্যোগী শাসক দল।

এই উদ্যোগেরই অংশ হিসেবে আইএনটিটিইউসি-র শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এখন সর্বত্র শিল্প মহলকে অনুরোধ করা হচ্ছে ‘গেটপাস’ ব্যবস্থা তুলে দিয়ে ‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতি’ চালু করার জন্য। শাসক শিবিরের শীর্ষ স্তরের বক্তব্য, এলাকায় শ্রমিকং সংগঠনের ‘দাদাগিরি’র বড় হাতিয়ার এই ‘গেটপাস’। সূত্রের খবর, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের বৈঠকে ‘গেটপাস’ তুলে দেওয়া নিয়ে আপত্তির কথা তুলেছিলেন শ্রমিক সংগঠনের নেতা শ্যামল মাইতি। কিন্তু স্পষ্টই বলে দেওয়া হয়েছে, ‘বায়োমেট্রিক’ পথে যাওয়াই এখন লক্ষ্য।

গোটা প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বলছেন, ‘‘শ্রমিক সংগঠনের কাজ শ্রমিকদের পাওনা, সুযোগ-সুবিধা দেখা। কে কোথায় কী ভাবে নিয়োগ করবে, এ সব দেখা নয়! শিল্প ও শ্রমিক-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করার যে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, তা সর্বত্র রূপায়ণ করা হবে। অনৈতিক কাজে যাঁরা জড়াবেন, তার দায়িত্ব তাঁদেরই নিতে হবে!’’

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের টাটা পাওয়ারের কর্তৃপক্ষ ফোন করে উৎপাদনের ঘাটতি অভিযোগ করেছিল। জেলা সভাপতির জবাবদিহি চাওয়া হয়। কাজ শুরু না হলে উপরে ডজানিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্য. জুড়ে বরা হয়েছে তকাউতে ছাড় দেওয়া হবে না। মন্ত্রীর ভাই ছাড় পায়নি। আইপ্যাকও করেছে।

স্টেট প্রোডাকটিভি কাউনে্সিল সার্ভে করে, গ্রাফাইটে ১০০ র বেশি অতিরিক্ত লোক আছে। স্থানীয় তৃণূল নেতৃত্ব প্রভাব চ্যাটার্জি তারা এটা করিয়ছিল। ওভারটাইম-সহ ব্িপু মাইনে পাওয়া যায়। ম্যানেজমেন্টে গোলমাল ছিল। মুখ্যমন্ত্রী শ্রমমনন্ক্রীকে বলেন দেখার জন্য। যেখানে বেশি লোক আছে, সেখানে নেবে কী করেআরও লোক? মন্ত্রী বুঝতে পারেননি। বিজিবিএসের পরে সিনার্জি মিটিংয়ে বলেন, ঋতকে গ্রাফাইট দেখতে বলছি। সেই থেকে শুরু

গুর্দাপুরের সভপাতি বদলাব, হলদিয়ারও বদল ককব। দুমাসের মাথায় পরিবর্তম বয়। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে ৪২টা চার্চার্ড অফ ডিমান্ড হয়েছে ওখানে। আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি অবান্তর দাবি করছিল। কারখানা বলে তাদের লস হয়েছে। জেলা সভাপতিই ধর্মঘট করিয়েছিল। এইচপিএল কড়া হাতে পদক্ষেপ করেছিল। ওরা বলে, বিপুল ক্ষতি হয়েছে।

হলদিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ভোটের সময়ে অনেক অভিযোগ এসেছিল। এমসিপিআই ও কলকাতায় করতে হল।

পরিষ্কার বার্তা দিতে হবে, টাকা নেওয়া চলবে না। শ্ণাল মাইতিকে সভাপতি করতে দেওয়া হয়নি। এখন মিডিয়া রেখে করা হচ্ছে।

এর পরে সব সভাপতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। রাজ্য সভাপতি সকলের সহ্গে কথা বলেছেন। সতর্ক করা হয়ছে। প্রশাসনিক পদক্ষেপও করা হতে পারে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের টাটা পাওয়ারের কর্তৃপক্ষ ফোন করে উৎপাদনের ঘাটতি অভিযোগ করেছিল। জেলা সভাপতির জবাবদিহি চাওয়া হয়। কাজ শুরু না হলে উপরে ডজানিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্য. জুড়ে বরা হয়েছে তকাউতে ছাড় দেওয়া হবে না। মন্ত্রীর ভাই ছাড় পায়নি। আইপ্যাকও করেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Industrial Area TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy