Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

TMC: কংগ্রেস পচা ডোবা, সমুদ্র তো তৃণমূলই, বলল মমতার দলের মুখপত্রের সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, এখন যেমন বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেস ব্যর্থ, অতীতে বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ে তারা ব্যর্থ হয়েছিল।

সনিয়া গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সনিয়া গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৩৯
Share: Save:

কংগ্রেসকে এ বার ‘পচা ডোবা’র সঙ্গে তুলনা করল তৃণমূল। শনিবার তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদকীয়তে এই উপমা টেনে লেখা হয়েছে, ‘কংগ্রেসের ঐতিহ্যের পতাকা তো তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে। এটাই সমুদ্র। পচা ডোবা আজ অপ্রাসঙ্গিক।’

আগামী বৃহস্পতিবার ভবানীপুরে উপনির্বাচন। শুক্রবারের প্রচারসভায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেসের যাঁরা মাথা, তাঁদের গায়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সিবিআই-ইডি হাত দেয় না কেন?’’ শনিবার তাঁর দলের মুখপত্রে লেখা হয়েছে, ‘এখনকার কংগ্রেস ব্যর্থ, দিশাহীন। তৃণমূলকে হারাতে এরা সিপিএমের সঙ্গে জোট করে বিজেপি-র সুবিধা করে দেওয়ার চেষ্টা করে।’ কোনও সাধারণ প্রতিবেদন বা উত্তর সম্পাদকীয় নয়, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করা হয়েছে তৃণমূলের মুখপত্রের মূল সম্পাদকীয়তে। এই বাক্যগুলি যে জোড়াফুল শিবিরের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতিফলন, তেমনটাই মনে করছেন অনেকে। অগস্টে দিল্লি গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে ‘বিজেপি-বিরোধী ঐক্য’ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন মমতা। তার দেড় মাসের মাথায় তৃণমূলের মুখপত্রে এই ধরনের সম্পাদকীয় ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।

তৃণমূল মুখপত্রের ওই সম্পাদকীয়তে বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেসের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। লেখা হয়েছে, ‘কংগ্রেস গুচ্ছ গুচ্ছ আসনে হেরে বিজেপি-কে বেশি সাংসদ নিয়ে দিল্লি যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। কংগ্রেস আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি-কে সুযোগ করে দিচ্ছে।’ গত ৭ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের পরে কার্যত একই সুরে কংগ্রেসকে বিঁধেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থার ভয়ে কংগ্রেসের মতো দল ‘ঘরে বসে’ গেলেও তৃণমূল আরও শক্তি বাড়িয়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়বে।

ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, এখন যেমন বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেস ব্যর্থ, অতীতে বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ে তারা ব্যর্থ হয়েছিল। তাই সেই লড়াইয়ের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছিলেন মমতা। সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘মানুষ আশীর্বাদ করেছে বলেই তৃণমূল আজ সরকারে। আর কংগ্রেস বিধানসভায় শূন্য।’ নীলবাড়ির লড়াইয়ে সংখ্যালঘু প্রভাবিত মালদহ জেলার ফলের উদাহরণ তুলে বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেসের কত ভোট তৃণমূলের দিকে এসেছে? এখনকার কংগ্রেস ব্যর্থ দিশাহীন।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ভবিষ্যতে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে মমতার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার ‘বার্তা’ও রয়েছে শনিবারের সম্পাদকীয়তে। যেখানে লেখা হয়েছে, ‘বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বকে যে হারানো যায়, সেটা বাংলার বিধানসভায় তৃণমূল দেখানোর আগে কংগ্রেস দেখাতে পারেনি।’

যদিও কংগ্রেসের ‘ব্যর্থতা’র কথা তুলে ধরার পাশাপাশি সম্ভাব্য বিজেপি-বিরোধী জোটে কংগ্রেসের জন্য দরজা খোলা রাখারও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের মুখপত্রে। বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেসকে আমরা অসম্মান করি না। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জোট বলছিও না।’ কিন্তু সেই সঙ্গেই বার্তা দেওয়া হয়েছে, ‘কংগ্রেস যদি বার বার ব্যর্থ হয়, ২০১৪ থেকে ২০১৯, লোকসভায় বিজেপি-র সুবিধা হয়ে যায়, তার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না।’

তৃণমূল মুখপত্রের সম্পাদকীয় সম্পর্কে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘কংগ্রেস অপ্রাসঙ্গিক হলে উনি (মমতা) দিল্লিতে সনিয়াজির সঙ্গে বিরোধী ঐক্য নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন কেন? কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সহযোগিতা না পেলে আপনি (মমতা) কি ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে বামফ্রন্টকে হারাতে পারতেন?’’ নাম না করে মমতাকে ‘বেইমান’ এবং ‘নিমকহারাম’ রাজনীতিকও বলেন অধীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE