Advertisement
E-Paper

দলকে না-জানিয়ে, আগ বাড়িয়ে তমন্নার মাকে টাকা দিতে গেলেন কেন? তৃণমূল শোকজ় করল হুমায়ুনকে

ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে শোকজ় করল তৃণমূল। তিনি নদিয়ার কালীগঞ্জে নিহত তমন্না খাতুনের বাড়িতে গিয়েছিলেন বুধবার। তাঁর মাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৫ ১৮:১২
ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর কালীগঞ্জে নিহত তমন্না খাতুনের বাড়িতে।

ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর কালীগঞ্জে নিহত তমন্না খাতুনের বাড়িতে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বিধায়ক, প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীরকে শোকজ় করল তৃণমূল। তিনি নদিয়ার কালীগঞ্জে নিহত নাবালিকা তমন্না খাতুনের বাড়িতে গিয়েছিলেন বুধবার। তার মাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তমন্নার মা সাবিনা বিবি সেই অর্থসাহায্য প্রত্যাখ্যান করেন। হুমায়ুনের আচরণ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেয় দল। রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বৃহস্পতিবার হুমায়ুনকে শোকজ় করার কথা জানান। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে এই চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এই বিষয়ে হুমায়ুন কবীর আনন্দবাজার ডট কমকে বলেন, ‘‘আমি সংবাদমাধ্যমে দেখেছি। বেশ কয়েক জনের মুখ থেকেও শুনেছি। এখনও আমি কোনও চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে জানাব।’’ তাঁর কালীগঞ্জ যাওয়ার বিষয়ে দল যে জানত না, সে কথাও জানিয়েছেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, ‘‘আমার একটি অসরকারি সংস্থা আছে। আমি সেই সংস্থার পক্ষ থেকে গিয়েছিলাম। দল জানত না।’’

গত ১৯ জুন কালীগঞ্জে বিধানসভার উপনির্বাচন হয়। তার গণনা ছিল সোমবার, ২৩ তারিখ। গণনা শেষের আগেই তৃণমূলের বিজয় উৎসব শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, সেখান থেকে সিপিএম কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। সেই বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় ১০ বছরের ছোট্ট তমন্নার। তাঁর মা জানিয়েছেন, তাঁরা সিপিএম করেন। সেই কারণে ভোটে জেতার পর প্রতিহিংসামূলক এই আক্রমণ করা হয়েছে।

কালীগঞ্জে জয়ের পরেও তমন্নার মৃত্যু অস্বস্তিতে রেখেছে রাজ্যের শাসকদলকে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার তমন্নাদের বাড়িতে যান হুমায়ুন। শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন। তমন্নার মা নানা অভিযোগ এবং ক্ষোভ উগরে দেন তাঁর কাছে। যে বোমার আঘাতে বালিকার মৃত্যু হয়েছে, কেন এখনও সেই বোমা উদ্ধার করা গেল না, কেন এক বারও কালীগঞ্জের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলেন না— এ সব প্রশ্ন তোলেন সাবিনা। এর পরেই কমলা রঙের একটি খাম শোকার্ত মায়ের হাতে তুলে দিতে যান হুয়ামুন। জানান, খামে কিছু টাকা আছে।

টাকার কথা শুনে ফুঁসে ওঠেন সাবিনা। ‘না, না, না’ বলে চিৎকার করে ওঠেন। জানান, তাঁদের বাড়ি আছে, জমি আছে। টাকার প্রয়োজন নেই। তিনি মেয়ের খুনের বিচার চান। টাকা নেওয়ার মতো কেউ নেই পরিবারে, জানান তমন্নার মা। হুমায়ুনের বক্তব্য ছিল, তিনি একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সেই সংগঠনের তরফে অর্থসাহায্য করতে চান। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তার পরেও টাকা নিতে চাননি তমন্নার মা।

অভিযোগ, তমন্নাদের বাড়িতে যে হুমায়ুন যাবেন, দলকে তা জানাননি। অর্থসাহায্যের বিষয়েও নিজে থেকেই উদ্যোগী হয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিধায়ক হয়ে দলের কোনও রাজ্য স্তরের নেতাকে না জানিয়ে নদিয়ায় চলে যাওয়া তৃণমূল ভাল চোখে দেখেনি। জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘যে ভাবে দলকে না জানিয়ে উনি নিহত কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তা দল সমর্থন করে না। তাই তাঁকে শোকজ় করা হয়েছে। কেন তিনি এ কাজ করেছেন, জানতে চাওয়া হয়েছে।” তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পরিষদীয় দল নয়, দলের মূল সংগঠনের তরফে হুমায়ুনকে শোকজ় করা হয়েছে।

Nadia TMC Kaliganj
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy