কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে সিন্ডিকেট বৈঠক চলাকালীন শুক্রবার মূল দু’টি গেট, দ্বারভাঙ্গা ভবনের নীচের তলার গেট, এমনকি সিন্ডিকেট রুমের দরজাতেও তালা দিল শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি। রাতে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের পক্ষ থেকে জোড়াসাঁকো থানায় খবর দেওয়া হয়। বেশি রাতে ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢোকে। ছাত্র সংগঠনের প্রবল বিক্ষোভের মধ্যেই রাত ১২টা নাগাদ উপাচার্য বেরিয়ে আসেন। তাঁর গাড়ির বনেটেও উঠে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।
টিএমসিপি নেতা অভিরূপ চক্রবর্তীর দাবি, বেআইনি ভাবে সিন্ডিকেট বৈঠক করছেন রাজ্যপাল মনোনীত অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে। তাঁর বৈঠক করার এক্তিয়ারই নেই, কারণ, চাকরির বয়স অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও তিনি অবৈধ ভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন গেটে তালা দেওয়ায় সিন্ডিকেট বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে কিছু সদস্য ঢুকতে পারেননি।
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় উচ্চ শিক্ষা দফতর বার বার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নীতি নির্ধারক কর্তৃপক্ষের বৈঠকে বারণ করে আসছে। যুক্তি, এমন বৈঠক আইনানুগ নয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথম দিকে অনুমতি চেয়ে পাননি। পরে অনুমতি ছাড়াই বৈঠক করছেন।
সূত্রের খবর, উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে সিন্ডিকেটের সদস্যদের বেশ কয়েক জনকে এই বৈঠকে যেতে নিষেধ করা হয়। কর্তৃপক্ষ বৈঠকে অনড় ছিলেন। এরই মধ্যে টিএমসিপি এসে গেট বন্ধ করে দেয়। ভিতরে তখন অন্তর্বর্তী উপাচার্য-সহ কিছু সদস্য।
অন্তর্বর্তী উপাচার্য জানান, রাজ্যই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অবসরের বয়স ৭০ বছর করেছে। সুপ্রিম কোর্টে তা জানিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সিলমোহরও দিয়েছে। শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তা জানে না? রাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভানেত্রী মহালয়া চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোনও ছাত্রের অধিকার নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে উপাচার্য এবং সিনিয়র শিক্ষকদের আটকে রাখার। আমরা মনে করি, গত ১৫ মাস ধরে রাজভবন বনাম বিকাশ ভবনের যে সংঘাত চলছে, তার অবশ্যম্ভাবী ফল আজকের ঘটনা। উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে আধিপত্য বাড়াতে চেয়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেই রাজ্য সরকার রসাতলে পাঠাচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)