Advertisement
E-Paper

ভাঙনের গ্রাস এড়াতে গঙ্গাপাড়ে ভেষজ গাছ

পাতা-ফুল-ফল থেকে শিকড় পর্যন্ত সব প্রত্যঙ্গ দিয়েই মানুষের সেবা-শুশ্রূষা করে তারা। এ বার নদীর ভাঙন থেকে পাড় বাঁচিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে খসখস গাছ এবং নানা ধরনের ভেষজ গাছ।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৫
ভাঙন: এ ভাবেই ভাঙছে গঙ্গার পাড় (ছবিটি নদিয়ার নাকাশিপাড়ার উদয়চন্দ্রপুরের)। তা ঠেকানোর জন্যই পাড়ে ভেষজ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা। —ফাইল চিত্র

ভাঙন: এ ভাবেই ভাঙছে গঙ্গার পাড় (ছবিটি নদিয়ার নাকাশিপাড়ার উদয়চন্দ্রপুরের)। তা ঠেকানোর জন্যই পাড়ে ভেষজ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা। —ফাইল চিত্র

পাতা-ফুল-ফল থেকে শিকড় পর্যন্ত সব প্রত্যঙ্গ দিয়েই মানুষের সেবা-শুশ্রূষা করে তারা। এ বার নদীর ভাঙন থেকে পাড় বাঁচিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে খসখস গাছ এবং নানা ধরনের ভেষজ গাছ। গঙ্গার ভাঙন যেখানে বছরভর লেগে থাকে, সেখানে লাগানো হবে খসখস গাছ। এই গাছের জঙ্গল ধরে রাখবে মাটিকে। রুখবে নদীপাড়ের ভাঙন।

খসখসের পাশাপাশি নদীর বাঁধ বরাবর থাকবে নিম, হরীতকী, অর্জুন, হিজল, আমলকী, বেল, বহেড়ার মতো ভেষজ গাছের সারি। বড় বড় গাছের মাঝখানে বসানো হবে অশ্বগন্ধা, স্বর্পগন্ধা, তুলসী, শতমূলি, ঘৃতকুমারী, ব্রাহ্মী, কুলেখাঁড়ার মতো নানা ধরনের ছোট ছোট ভেষজ গাছ। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, খসখস গাছের গুচ্ছ শিকড় মাটিকে কামড়ে ধরে রাখে। আবার ভেষজ গুণেও সমৃদ্ধ ওই গাছ। খসখসের পাতা থেকে তৈরি তেল বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরির
কাজে লাগে।

কেন্দ্রের ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ বা স্বচ্ছ গঙ্গা প্রকল্পের অধীনে এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ থেকে সাগর পর্যন্ত দীর্ঘ গঙ্গাতীরের প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে খসখস-সহ নানা ধরনের ভেষজ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গঙ্গার জল দূষণ ও ভাঙন রুখতে কেন্দ্রীয় সরকার ‘স্বচ্ছ গঙ্গা’ প্রকল্পের সূচনা করেছে। গোমুখ থেকে সাগর পর্যন্ত সুদীর্ঘ যাত্রাপথে গঙ্গাকে নির্মল রাখতে এই প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। যে-সব রাজ্যের উপর দিয়ে গঙ্গা প্রবাহিত, এই কেন্দ্রীয় মিশনের আওতায় তার প্রতিটিতেই ভেষজ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।

নবান্ন সূত্রের খবর, এই প্রকল্পের নোডাল এজেন্সি হিসেবে রাখা হচ্ছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ ভেষজ উদ্ভিদ পর্ষদকে। বাছাই করা আটটি বেসরকারি সমাজসেবী সংস্থা গাছ লাগানোর দায়িত্বে থাকবে। প্রকল্পের প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে প্রায়
ন’‌কোটি টাকা।

কোথায় কী ধরনের গাছ লাগানো হবে, তার রূপরেখা তৈরি করছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। উন্নত মানের গাছের চারাও তৈরি হবে ওই প্রতিষ্ঠানে। গাছের চারা তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে তার রক্ষণাবেক্ষণের প্রশিক্ষণও দেবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিজ্ঞানী এবং প্রকল্পের আধিকারিক কৌশিক ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে মূলত ভেষজ গাছ লাগিয়ে গঙ্গাকে বাঁচানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে নদী বাঁচবে, ভেষজ গাছের মাধ্যমে সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন।’’

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ভেষজ উদ্ভিদ পর্ষদের প্রধান আধিকারিক প্রশান্ত সরকার জানান, ভেষজ গাছ লাগানোর প্রস্তাবটি তাঁরাই কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছেন। ‘‘আমাদের আশা, আগামী অর্থবর্ষের (২০১৭-’১৮) শুরুতেই এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়া যাবে,’’ বললেন প্রশান্তবাবু।

Herbal plant Erosion Ganges
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy