টানা দুর্যোগ-বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। পুজোয় সেখানে বেড়াতে গিয়ে বিপাকে পড়লেন হুগলির কয়েক জন। পাহাড়ে দু’দিন আটকে থাকার পর সোমবার তাঁরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। ফেরার পথে ফোনে শোনালেন শনিবার রাতের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।
হুগলির বৈদ্যবাটি থেকে উত্তরবঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন দু’টি পরিবারের মোট ছ’জন। গত ১ অক্টোবর ব্যান্ডেল থেকে তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস ধরে পরের দিন নিউ মাল স্টেশনে পৌঁছেছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে তাঁরা যান দাওয়াপানিতে। সেখানে দু’দিন থেকে তাঁরা দার্জিলিঙের কাগে পৌঁছোন। তার পরেই শুরু হয় দুর্যোগ। একটি পরিবারের কর্তা জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাত ১০টার পর থেকেই ভয়াবহ বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। বৃষ্টির সঙ্গে বাজ পড়তে থাকে। মনে হচ্ছিল যেন পাহাড় ভেঙে পড়ছে। ভয়ে সকলে মিলে একটা ঘরেই রাত কাটিয়েছিলাম।’’
আর একটি পরিবারের কর্তা স্নেহাশিস বলেন, ‘‘এত বৃষ্টি এর আগে দেখিনি। ঋষিখোলা নদী ফুলেফেঁপে উঠেছিল। সকালে উঠে দেখি, নদী সব ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। একদিন কাগে আটকে থাকার পর অন্য রাস্তা দিয়ে এ বার বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছি।’’
গত ১৮ বছর ধরে একাধিক বার উত্তরবঙ্গে বেড়াতে গিয়েছেন জয়ন্ত এবং তাঁর স্ত্রী রেশমিরা। জয়ন্ত বলেন, ‘‘পাহাড় আমাদের খুবই প্রিয়। কিন্তু এ বার যে অভিজ্ঞতা হল, তা ভোলার নয়।’’
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় এবং তরাই-ডুয়ার্সে। ধস নেমে বাড়ি-রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত। অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বালাসন নদীর উপর দুধিয়ার লোহার সেতুর একাংশ বৃষ্টিতে ভেঙে যায়। এর ফলে শিলিগুড়ি এবং মিরিকের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সৌরেনির কাছে দারাগাঁওয়ে গভীর রাতে ধস নামে। একটি বাড়ি ধসে যায়। আপার দুধিয়া বা ডাম্ফেডার এলাকায় চার থেকে পাঁচটি বাড়ি ধসে গিয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে। বেশ কিছু হোমস্টে ছিল দার্জিলিঙের ওই অংশে। সেগুলোও ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুধিয়া নদীর একপাশে রয়েছে বিএসএফের ক্যাম্প। সেটাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তরবঙ্গে বহু পর্যটক এখনও আটকে। তাঁদের পাঙ্খাবাড়ি এবং তিনধারিয়ার রাস্তা দিয়ে শিলিগুড়িতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।