Advertisement
E-Paper

একজোট ব্যবসায়ীরা আজ থেকে ভয় ভুলে ব্যবসা শুরু

শনিবার দুপুরে দার্জিলিং শহরের ১৯টি ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রায় ৩ ঘণ্টা বৈঠক করে রবিবার থেকে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল। আর এই ঘোষণাতেই স্পষ্ট হল পাহাড়ের মনোভাব।

কিশোর সাহা ও প্রতিভা গিরি

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিমল গুরুঙ্গের ফতোয়া অগ্রাহ্য করে বিনয় তামাঙ্গদের পাশে একরকম খোলাখুলিই দাঁড়ানো শুরু করল পাহাড়। শনিবার দুপুরে দার্জিলিং শহরের ১৯টি ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রায় ৩ ঘণ্টা বৈঠক করে রবিবার থেকে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল। আর এই ঘোষণাতেই স্পষ্ট হল পাহাড়ের মনোভাব।

ওই বৈঠকের সভাপতি তথা চকবাজারের সত্তরোর্ধ্ব মহিলা ব্যবসায়ী খুদু তামাঙ্গ বলেছেন, ‘‘অনেক বন্‌ধ হয়েছে। পুজো-মহরম সামনে। তাই রবিবার থেকে দোকানপাট খোলা হবে। তবে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আমাদের সমর্থন রয়েছে। কারণ, গোর্খাল্যান্ড আমাদের স্বপ্ন।’’

আরও পড়ুন: বার্তা পাঠিয়ে সন্ধি চাইছেন বিমল গুরুঙ্গ

রাত পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মোর্চার কট্টরপন্থীরা কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। আপত্তি জানিয়ে কোনও পোস্টারও পড়েনি চকবাজার অথবা ম্যালে। বরং, মোর্চার কট্টরপন্থীদের অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত দীনেশ গুরুঙ্গ ও তাঁর অনুগামীরা সুর বদলেছেন। মোর্চা সূত্রের দাবি, মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত দীনেশ ওরফে ক্যারাটে কাইলাও জামিনে মুক্ত হয়ে এখন বিনয়ের পাশে থাকার কথা বলছেন। এ দিনের বৈঠকে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার দার্জিলিং সদরের তিন প্রধান নেতা ডি কে প্রধান, পি টি ওলা, ত্রিলোক রোকাকে সিআইডি গ্রেফতার করেছে। তার উপরে এতদিন চকবাজার, ম্যাল, চৌরাস্তা, ওরিয়েন্ট রোডের মতো জায়গায় বন্‌ধ জারি রাখতে যে দীনেশ-অনুগামীরা দাপট দেখাতেন, তাঁদের পাশে পেয়ে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেনি ১৯টি ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রায় ৫০০ সদস্য। এমনকী, দার্জিলিং শহরের বেশ কিছু এলাকায় শনিবার দুপুরের পরেই দোকান খুলেছে।

পাহাড়ের হোটেল, রেস্তোরাঁ মালিকরা জানিয়েছেন, দোকানপাট খুলতে শুরু করলে তাঁরাও পুজোর আগেই ব্যবসা চালুর পথে হাঁটবেন। ক্লাব সাইড রোডের এক রেস্তোরাঁ মালিক জানান, বিনয়-অনীত যে দিন থেকে বন্‌ধ উপেক্ষার ডাক দিয়েছেন, সে দিন থেকে কার্শিয়াং, মিরিক, কালিম্পংয়ে কিছু দোকান খুললেও দার্জিলিঙে তেমন সাড়া মেলেনি।

এ বার দার্জিলিঙে ব্যবসায়ীরা দোকান খুললে তাঁরাও হোটেল খোলার সিদ্ধান্ত নেবেন। ঘটনাচক্রে, ষাট ছুঁইছুই দীনেশেরও একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেখানকার কর্মীরা ঝাড়পোঁছ শুরু করে দিয়েছেন। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী জানান, পাহাড়ে সর্বত্র বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। নবান্ন সূত্রে খবর, পাহাড়ে জনজীবন যাতে স্বাভাবিক থাকে সেটা নিশ্চিত করাই প্রশাসনের লক্ষ্য। গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ নেতাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি তারা যাতে কোনও ভাবেই পাহাড়ে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সেটাও নজরে রাখা হচ্ছে।

এ দিকে মোর্চার দার্জিলিং শাখার এক শীর্ষ নেতা জানান, গত দু’সপ্তাহ ধরে পাহাড়ে কিছু জায়গায় দোকানপাট খুললেও তাঁরা বাধা দেননি। আলোচনাপন্থী মোর্চা নেতা বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপারা জানান, সবার সহযোগিতা মিললেই পাহাড় স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে না।

তা হলে কি পুজোর মধ্যে ফের কেভেন্টার্সে গিয়ে সসেজ সহযোগে চায়ে চুমুক দেওয়া যাবে? গ্লেনারিজে বসে গান শুনতে শুনতে খাওয়া যাবে ধোঁয়া ওঠা সিজলার? এখন এই প্রশ্ন ঘুরছে পাহাড়-সমতলে।

দার্জিলিং Darjeeling gorkhaland Strike বন্‌ধ GJM Morcha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy