এখন কেবল বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
গ্রেফতারির পর থেকেই পার্থর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। তাই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথমে মন্ত্রিত্ব খুইয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর তৃণমূলের সমস্ত দলীয় পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে তাঁকে। দলের তরফে এমন দূরত্ব-বৃদ্ধির পরও শনিবার পার্থ বললেন, ‘‘দলের সঙ্গে ছিলাম, দলের সঙ্গে আছি।’’ কিন্তু তাঁর মন্তব্যের কোনও দায় নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। শনিবার অসুস্থ বোধ করায় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা শেষে বেরোনোর সময় সংবাদমাধ্যমে তৃণমূলের সঙ্গে থাকার বার্তা দেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
কিন্তু তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের অবস্থান খুব স্পষ্ট করে জানিয়েছেন। অবশ্যই পার্থবাবু তৃণমূলের প্রথম দিনের সৈনিক ও মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। কিন্তু তাঁকেও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে আসতে হবে। তিনি কোনও কিছু বলতেই পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি নির্দোষ প্রমাণ হলে, দল অবশ্যই তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনা করবে।’’ এমন কথা বলে তৃণমূল সাংসদ বুঝিয়ে দিয়েছেন, পার্থ প্রসঙ্গে দল এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। তাই পার্থ কী বলল, তাতে দলের অবস্থানে বদল হবে না।
গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত তৃণমূল রাজনীতিতে দলের মুখ হিসেবে সংবাদমাধ্যমের কাছে যাবতীয় বার্তা দিতেন মহাসচিব পার্থ। কিন্তু ২২ জুলাই তাঁর বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)-র হানা দেওয়ার পর তিনি গ্রেফতার হন। টালিগঞ্জ ও বেলঘড়িয়ায় তাঁর বান্ধবী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে মোট ৫২ কোটি টাকা উদ্ধার হওয়ার পর তাঁকে মন্ত্রিসভা ও দল থেকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। তাঁর সাসপেনশনের ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই ঘটনার পর পার্থ বলেছিলেন, ‘‘দলের এই সিদ্ধান্ত নিরপেক্ষ তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে।’’
পার্থ এমন বললেও, তাতে প্রতিক্রিয়া দেয়নি তৃণমূল। আবার বৃহস্পতিবার আদালতের প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে পার্থের মন্তব্য করেন, “কেউ ছাড়া পাবে না।” একটু থেমে তাঁর সংযোজন ছিল, “সময়ে সব কিছু প্রমাণ হবে।’’ যদিও ‘কেউ’ বলতে কাদের ইঙ্গিত করলেন প্রাক্তন মন্ত্রী, সময়ে কী প্রমাণ হবে, তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্চ করেননি তিনি। তাঁর সেই বক্তব্যেও মৌনই ছিল তৃণমূল। কিন্তু শনিবার নিজেকে ফের তৃণমূলের সদস্য বলে পার্থর বার্তার পরেই প্রতিক্রিয়ায় আবারও তৃণমূল বোঝাল, এখনও পার্থর সঙ্গে নেই দল। ১৪ অগস্ট সন্ধ্যায় পার্থর বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে সভা করতে গিয়েও তাঁর নাম মুখে আনেননি মমতা। বরং সুর চড়িয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের হয়ে। তাই পার্থ নিজেকে যতই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত প্রমাণ করার চেষ্টা করুন না কেন, আপাতত তৃণমূল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy