নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে আসছেন বাবলু করিম। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিতে চলেছেন কলকাতা বন্দর এলাকার নেতা এবং মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ বাবলু করিম। যাঁর দাদা বাপি করিম সারদা কেলেঙ্কারিতে অধুনা জেলবন্দি মন্ত্রী মদন মিত্রের আপ্ত সহায়ক ছিলেন। সারদা কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই এবং ইডি বাপিকে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।
খিদিরপুরে মঙ্গলবার সভা করে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-তে যোগ দেবেন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের অনুগামী বলে পরিচিত বাবলু। কলকাতা পুরসভার ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। রবিবার তিনি নিজাম প্যালেসে মুকুলের সঙ্গে দেখা করতে যান। যদিও বাবলুর দাবি, নিজাম প্যালেসে খুব ভিড় থাকায় এ দিন মুকুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়নি। বাবলু জানান, তিনি চার দিন আগে তৃণমূল ছেড়েছেন। তাই মুকুলের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর কোনও অসুবিধা নেই।
কিন্তু, রাজ্যের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনগুলিতে স্পষ্ট, সারদা কেলেঙ্কারি বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য যতই শাসক তৃণমূলের দিকে আঙুল উঠুক, তাদের ভোটব্যাঙ্ক অটুট। সংখ্যালঘু সমর্থনের সিংহভাগও তাদের দিকে। এমতাবস্থায় এক জন সংখ্যালঘু নেতা হয়ে বাবলু কেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাচ্ছেন? বাবলুর ব্যাখ্যা, এক সময় বন্দরে ফরওয়ার্ড ব্লকের কলিমুদ্দিন শামস এবং কংগ্রেসের রাম পিয়ারি রামের মাফিয়াসুলফ কাজকর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তিনি সদলবলে তৃণমূলে গিয়েছিলেন। এখন সেই কলিমুদ্দিনের ছেলে মইনুদ্দিন এবং তাঁর ভাই নিজামুদ্দিন তৃণমূলে। নিজামুদ্দিন কলকাতা পুরভোটে প্রার্থীও হয়েছেন। রাম পিয়ারি এবং তাঁর স্ত্রী হেমা রামও কলকাতা পুরভোটে তৃণমূল প্রার্থী। তাই তৃণমূল ত্যাগ করা ছাড়া তাঁর উপায়ান্তর ছিল না বলে বাবলুর দাবি। তাঁর আরও বক্তব্য, “বিজেপি-কে একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি পক্ষপাতযুক্ত দল বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকারের কাজকর্ম সেই অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করছে। রাজ্যের মানুষ বিজেপি-কে দিয়েই আবার পরিবর্তন ঘটাতে চাইছেন। তাই আমি বিজেপি-তে যাচ্ছি।” পুরসভায় তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে তিনি দলত্যাগ করছেন, এই জল্পনা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন বাবলু।
প্রসঙ্গত, দিনের পর দিন বৈঠক করেও কলকাতা পুরভোটের প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি। কারণ, কলকাতায় দলের প্রার্থী হওয়ার জন্য ১৮০০-রও বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে! এমন পরিস্থিতিতে বাবলুর মতো কাউকে দলে টানতে পারলে সংখ্যালঘু সমর্থন পেতে তাদের সুবিধা হবে বলেই বিজেপি মনে করছে। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা অবশ্য বলেন, “যাঁরা চান, দলের বাইরে যেতেই পারেন। জোর করে কাউকে আটকে রাখার প্রশ্ন নেই। তবে বাংলার সংখ্যালঘু মানুষের মূল ভরসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy