Advertisement
E-Paper

খড়্গপুরের নেতাকে সতর্ক করল তৃণমূল

বিড়ম্বনায় পড়ে জহরলাল পালকে সতর্ক করল তৃণমূল। শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব খড়্গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধানকে জানিয়ে দিয়েছেন, জেলে গিয়ে শ্রীনু নায়ডুর সঙ্গে দেখা করা উচিত হয়নি। দলের এক সূত্রে খবর, রবিবার জহরবাবুকে ফোন করে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০৪:১৩

বিড়ম্বনায় পড়ে জহরলাল পালকে সতর্ক করল তৃণমূল। শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব খড়্গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধানকে জানিয়ে দিয়েছেন, জেলে গিয়ে শ্রীনু নায়ডুর সঙ্গে দেখা করা উচিত হয়নি। দলের এক সূত্রে খবর, রবিবার জহরবাবুকে ফোন করে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়।

এ দিন দীনেনবাবু খড়্গপুরেও গিয়েছিলেন। অবশ্য সেখানে তাঁর সঙ্গে জহরবাবুর দেখা হয়নি। পুরো বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব।

কেন ফোন করে জহরবাবুকে সতর্ক করতে হল? দলীয় নেতৃত্বের সম্মতি না নিয়েই কি তিনি জেলে গিয়ে রেল মাফিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন? সদুত্তর এড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবুর জবাব, “এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্যই করব না।” তাঁর সঙ্গে যে ফোনে দলের জেলা সভাপতির কথা হয়েছে, তা অবশ্য মানছেন রেলশহরের প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরবাবু। তবে কী কথা হয়েছে তাঁর বক্তব্য, “দীনেনদার সঙ্গে কথা হয়েছে। কেন দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে কী আমার কথা হতে পারে না? এটা আবার এমন কী ব্যাপার!”

চলতি সপ্তাহের শেষে কিংবা আগামী সপ্তাহের শুরুতে দলের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করবেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই বৈঠকে মাফিয়া- সাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে ঝড় উঠতে পারে বলে দলেরই একাংশের অনুমান। বস্তুত, তাদের এক মহিলা কাউন্সিলরকে ভাঙাতে জেলে গিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা করেছেন তৃণমূল নেতা তথা খড়্গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। এই অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপির বক্তব্য, শুক্রবার মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে গিয়ে শ্রীনু নায়ডুর সঙ্গে দেখা করেন জহরবাবু। শ্রীনুর স্ত্রী পূজা নায়ডু এ বার বিজেপির টিকিটে পুরভোটে জিতেছেন। পুরবোর্ড গঠনে পূজার সমর্থন চাইতেই জহরবাবু শ্রীনুর কাছে গিয়েছিলেন বলে বিজেপির দাবি। জেলে গিয়ে রেল মাফিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে চরম অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল। শাসক দলের এক জেলা নেতা মানছেন, “এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।” তাঁর কথায়, “আমাদের কারওরই এমন কিছু করা উচিত নয় যার ফলে দলকেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।”

সদ্য সমাপ্ত খড়্গপুর পুরসভার নির্বাচনে কোনও দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ৩৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের ঝুলিতে এসেছে ১১টি আসন, সেখানে কংগ্রেসেরও ১১টি। অন্যদিকে, বামেদের ঝুলিতে গিয়েছে ৬টি। বিজেপির ৭টি। এই পরিস্থিতিতে পুরবোর্ড গঠন কংগ্রেস- শিবির যেমন চেষ্টা চালাচ্ছে, তেমন তৃণমূল- শিবিরও চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে বিরোধী ভাঙাতে জেলে গিয়ে তৃণমূল নেতার মাফিয়া- সাক্ষাত্‌ তাতে অন্য মাত্রা যোগ করেছে। বিরোধীদের দাবি, এ বারও ‘ম্যাজিক ফিগার’- এর ধারেকাছে পৌঁছতে না পেরে ‘অন্য পথে’ পুরবোর্ড গড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। রেল মাফিয়া রামবাবুকে পুরভোটে তৃণমূলের প্রচারে দেখা গিয়েছে।

বামেদের দাবি, শ্রীনুর সঙ্গেও তৃণমূলের সম্পর্ক নতুন নয়। মাঝে হয়তো দূরত্ব হয়েছিল। ভোটের ফল বেরোতে ফের কাছে আসার চেষ্টা শুরু হয়েছে। রেলশহরে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল দীর্ঘদিনের। একদিকে দলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী ও তাঁর অনুগামীরা। অন্যদিকে, প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল ও তাঁর অনুগামীরা। দু’জনেই এ বার পুরভোটে জিতেছেন। পুরপ্রধান হওয়ার দৌড়েও রয়েছেন। এই অবস্থায় পূজার সমর্থন পেলে জহরবাবু তাঁর লক্ষ্যের দিকে একধাপ এগিয়ে যাবেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। দলের এক সূত্রে খবর, রবিবার তৃণমূলের খড়্গপুর শহর কার্যালয়ে গিয়ে স্থানীয় নেতা- কর্মীদের সঙ্গে পুরভোট পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাও করেছেন দীনেনবাবু। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অবশ্য বলেন, “খড়্গপুর নিয়ে দলে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি। দলের এক কর্মীর মা মারা গিয়েছেন। সেই জন্যই এদিন খড়্গপুরে গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে ওই কর্মীর সঙ্গে দেখা করি।”

Mednipur Trinamool Congress BJP CPM Kharagpur srinu naidu Dinesh das
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy