সেতুর দাবিতে ভোট বয়কট করেছিলেন ওঁরা। এ বার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) একটি জলপ্রকল্পের কাজ আটকে, তাঁদের গ্রামগুলিতে জল পৌঁছনোর দাবি তুললেন রাজনগরের তিনটি গ্রামের মানুষ। শুক্রবার সকালের ঘটনা।
পিএইচই ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনগরের গংমুড়ি-জয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটা বড় অংশে পরিস্রুত পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে একটি প্রকল্পের কাজে হাত দিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। জয়পুর গ্রামের কাছে সিদ্ধেশ্বরী নদীগর্ভে ছ’টি গভীর নলকূপ খনন করে সেখান থেকেই জল তুলে তা সরবারহ করার কথা। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নদীর ঠিক পাশেই ভূ-গর্ভস্থ জলাধার তৈরি হয়েছে। গোবরা, বাগানপাড়া ও রাজারকেন্দ গ্রামে ওভারহেড রিজার্ভার তৈরির পাশাপাশি পাইপলাইন পাতার কাজও শেষ।
নদীর পাশে পাম্পহাউসের সঙ্গে নদীগর্ভের নলকূপগুলির সঙ্গে পাইপলাইন জুড়ে দেওয়ার কাজ চলছিল শুক্রবার। সেই কাজটাই বন্ধ করে দিয়েছেন নদীর ও পারে থাকা গোয়াবাগান, কুড়ুলমেটিয়া ও পটলপুর গ্রামের কিছু লোক। বিক্ষুব্ধ বাপি ঘোষ, যুদ্ধপতি ঘোষ, সুনীল সরেন, নদিয়ানন্দন ঘোষ এবং মলয় বাস্কিদের কথায়, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম নদীর নীচে পাইপলাইন দিয়ে জল পৌঁছক পিএইচই। জলসঙ্কট শুধু নদীর ও পারের গ্রামগুলিতেই রয়েছে, এমনটা তো নয়। একই অবস্থা আমাদের গ্রামেও। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি গ্রামে জল না পৌঁছলে জলপ্রকল্প আমরা গড়তে দেব না।’’
চাপে পড়ে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদার সংস্থা। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সে নিয়ে অবশ্য জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। যোগাযোগ করা যায়নি অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনায়ের সঙ্গে। এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুজয় বারুই বলেন, ‘‘ছুটিতে আছি। কিছু বলতে পারব না।’’
আদতে বীরভূমের রাজনগর ব্লকের মধ্যে হলেও সিদ্ধেশ্বরী নদী কার্যত বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে গোয়াবাগান, কুড়ুলমেটিয়া ও পটলপুর নামের তিনটি গ্রামকে। মূল সমস্যা নদী পারাপারের জন্য কোনও সেতু না থাকা। নদীতে সেতু চাই— তিনটি গ্রামের প্রায় ১৪০০ বাসিন্দার মূল দাবি সেটাই। তাঁদের দাবিকে কেন, কোনও গুরুত্ব দেয় না প্রশাসন— সেই ক্ষোভে গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দেননি কেউ। একান্তে অনেকেই বলছেন, ‘‘প্রতিবাদ না করলে কোনও দিনই কিছু হবে না। তাই জলপ্রকল্পে বাধা দিয়েছি।’’
রাজনগরের বিডিও দীনেশ মিশ্র বলেন, ‘‘সেতুর বিষয়টি বিবেচনায় থাকলেও এখনই সেটা গড়ার মতো অবস্থা ব্লক বা জেলা প্রশাসনের নেই। আর নদীর নীচে পাইপলাইন দিয়ে জল সরবরাহ সম্ভব নয়, সেটা আগেই জানিয়েছে পিএইচই। তাই কাজ বন্ধ করে কী লাভ। প্রয়োজন তো জলের। সেটা অন্য ভাবেও পাওয়া যেতে পারে। সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এলে পদক্ষেপ নেব কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy