Advertisement
E-Paper

তিন মৃত্যুর নেপথ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ? কসবাকাণ্ডে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে গ্রেফতার মামা-মামি

মঙ্গলবার সকালে কসবার হালতুতে সোমনাথ, তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায় এবং আড়াই বছরের পুত্রের দেহ উদ্ধার হয়। ছেলের দেহ নিজের সঙ্গে বেঁধে গলায় দড়ি দিয়েছিলেন সোমনাথ। তাঁর স্ত্রীও গলায় দড়ি দেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৫ ২০:৫১
(বাঁ দিকে) পুত্রকে পাশে নিয়ে সোমনাথ রায়। সেই শিশুর দেহ কোলে নিয়ে এক আত্মীয় (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) পুত্রকে পাশে নিয়ে সোমনাথ রায়। সেই শিশুর দেহ কোলে নিয়ে এক আত্মীয় (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

কসবাকাণ্ডে গ্রেফতার হলেন মৃত সোমনাথ রায়ের মামা এবং মামি। সোমনাথের শ্বশুর এবং শ্যালিকা থানায় দু’টি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রদীপকুমার ঘোষাল এবং নীলিমা ঘোষালকে। প্রতিবেশীদের দাবি, তাঁরা কলকাতা পুলিশে চাকরি করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি খুনের অভিযোগ রয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে কসবার হালতুতে সোমনাথ, তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায় এবং আড়াই বছরের পুত্রের দেহ উদ্ধার হয়। ছেলের দেহ নিজের সঙ্গে বেঁধে গলায় দড়ি দিয়েছিলেন সোমনাথ। তাঁর স্ত্রীও গলায় দড়ি দেন। সুমিত্রার পরিবারের দাবি, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই দম্পতি। তারা আঙুল তুলেছেন সোমনাথের মামা-মামির দিকে। ঘরের দেওয়ালে সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছিলেন সোমনাথ। সেখানেও এই সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের কথা উল্লেখ রয়েছে। এর পরেই সোমনাথের মামা-মামিকে থানায় আটক করে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। এ বার তাঁদের গ্রেফতার করা হল।

কসবা থানায় এই ঘটনায় দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রথমটি করেছেন মৃত সুমিত্রার দিদি সুপর্ণা ভৌমিক। তিনি সোমনাথের মামা প্রদীপ, মামি নীলিমার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন। দ্বিতীয় অভিযোগ করেছেন সুমিত্রার বাবা বিশ্বনাথ ভৌমিক। তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন।

মঙ্গলবার রায় পরিবারের তিন জনের দেহ উদ্ধারের পরেই সুমিত্রার বাপের বাড়ির লোকজন দাবি করেন, সম্পত্তির কারণেই আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা। সুমিত্রার বাবা বলেন, ‘‘অনেক বার বলেছিলাম জায়গা বিক্রি করে দিয়ে চলে আয়। কোনও বাড়িতে গিয়ে ভাড়া থাক। শোনেনি।’’ কেন এই পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি? বৃদ্ধের কথায়, ‘‘সোমনাথের বাবা-মা থাকার জন্য জমি দিয়ে গিয়েছিলেন। মামা-মামি এসে দাবি করেন, ওই জমি ভাগ করতে হবে। তিন-চার বছর ধরে মেয়ে-জামাইয়ের উপর অত্যাচার করত মামা-মামি।’’ বৃদ্ধ জানান, তাঁর মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। জামাই অটো চালাতেন। সে সবই লোকে সহ্য করতে পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের ভালবাসা দেখে লোকে সহ্য করতে পারেনি।’’ সুমিত্রার দিদি দাবি করে বলেন, ‘‘জমির জন্য আমার বোন, বোনের ছেলেকে মেরেছে। অনেক দিন ধরে ঝামেলা।’’

যদিও স্থানীয়দের একাংশ আবার দাবি করেন, সোমনাথের বাড়িতে পাওনাদারও আসত। তাঁরা শুনেছেন, তবে দেখেননি। এক প্রতিবেশী শ্যামলী দাস বলেন, ‘‘আমি শুনেছি পাওনাদারেরা আসত। এই কথা ওঁর মামাই বলেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, পাওনাদার এসে টাকা চাইতেন।’’ দেওয়ালে যে সুইসাইড নোট লেখা ছিল, সেখানেও পাওনাদারদের কথা বলা হয়। মৃত্যুর নেপথ্যে তাই আর্থিক অনটনের বিষয়টিও তদন্তকারীরা উড়িয়ে দেননি বলেই সূত্রের খবর। শেষ পর্যন্ত সোমনাথের মামা-মামিকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হল। তার পরেই জল্পনা, তবে কি সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের কারণেই চরম পদক্ষেপ করেন সোমনাথ, তাঁর স্ত্রী।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy