কমিশনের লোভে অন্যের কালো টাকা সাদা করার খেলায় মেতেছেন এক দল ব্যবসায়ী। বেনামী সংস্থা তৈরি করে তার অ্যাকাউন্টে কালো টাকা জমা করছেন তাঁরা। তার পরে একের পর এক ভুয়ো লেনদেনের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা হচ্ছে। এ বার আয়করের নজর পড়েছেন তাঁরা।
নোট বাতিলের পরে একটি ব্যাঙ্কের বড়বাজার শাখায় হাওড়ার এক কাপড়ের ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা জমা পড়েছে বলে খবর মেলে। তদন্তে নেমে আয়কর অফিসারেরা দেখেন, ১১ থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৭ কোটি টাকা জমা পড়েছে ওই অ্যাকাউন্টে। নেট ব্যাঙ্কিং মারফত কয়েক মিনিটে তা ট্রান্সফারও হয়ে গিয়েছে ২০টি অ্যাকাউন্টে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে সব অ্যাকাউন্টে ওই টাকা ট্রান্সফার হয়েছে, সেগুলিও ভুয়ো সংস্থার নামে।
জেরায় ওই ব্যবসায়ী জানান, শাড়ির ছোটখাটো ব্যবসা রয়েছে তাঁর। তাতে ভাল করে দিন গুজরান হয় না। তাই কমিশনের লোভে কালো টাকা সাদা করার কাজে নেমেছেন। ৭ কোটি কালো টাকা সাদা করলে ৫ লক্ষ টাকা কমিশন।
কিন্তু কার কাছ থেকে পেলেন এত টাকা? ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জানা যায় বড়বাজারের দুই মাঝারি ব্যবসায়ীর নাম। তাঁদের এক জনের ৫৬টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেগুলি সব ভুয়ো সংস্থার নামে।
আয়কর অফিসারেরা জেনেছেন, হাওড়ার ওই ব্যবসায়ীর কাছে টাকা এলে ব্যাঙ্কে ফোন করে অঙ্কটা জানাতেন। বাতিল হওয়া টাকা নিয়ে পিছনের গেট দিয়ে ব্যাঙ্কে ঢুকতেন তিনি। তা-ও ব্যাঙ্ক বন্ধ হওয়ার পরে। তত ক্ষণে মোটা অঙ্কের টাকা খাতায়-কলমে ট্রান্সফার হয়ে যেত। এক অফিসারের কথায়, ‘‘ক্যাশিয়ারের আসনের পিছনের সামান্য অংশ ছাড়া ব্যাঙ্কের ওই শাখার সব জায়গাই সিসিটিভি-র আওতায় রয়েছে। তাই ওই জায়গাটাকেই লেনদেনের জন্য বেছে নেওয়া হত।’’ বড়বাজারের ওই দুই ব্যবসায়ীও কিন্তু আয়করের টার্গেট নয়। যাঁরা কালো টাকার মূল কারবারি, তাঁরা এ রকম বহু ছোট ব্যবসায়ীর মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করাচ্ছেন। তাই, এই মাঝারি ব্যবসায়ীদের ধরে পিরামিডের চুড়োয় পৌঁছতে চাইছেন আয়কর অফিসারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy