Advertisement
০৭ মে ২০২৪
হরিদেবপুর ও সোদপুর

দুই ডাকাতিতে একই বাংলাদেশি দল: পুলিশ

দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। অথচ কয়েক মাসের ব্যবধানে হরিদেবপুর ও সোদপুরের দু’টি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়েছে একই কায়দায়। এলাকা আলাদা হলেও এ কাজ একই ডাকাত দলের এবং তারা বেশিরভাগই বাংলাদেশি, এমনই দাবি লালবাজারের।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০২:০৩
Share: Save:

দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। অথচ কয়েক মাসের ব্যবধানে হরিদেবপুর ও সোদপুরের দু’টি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়েছে একই কায়দায়। এলাকা আলাদা হলেও এ কাজ একই ডাকাত দলের এবং তারা বেশিরভাগই বাংলাদেশি, এমনই দাবি লালবাজারের।

পুলিশ জানায়, চলতি মাসের প্রথম দিনে সোদপুরের ওই নামী সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় কয়েক জন গ্রেফতার হলেও মূল অভিযুক্ত বাংলাদেশি ডাকাতেরা পলাতক। অন্য দিকে, গত অক্টোবরে হরিদেবপুরের সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

প্রায় ১০ মাস আগে হরিদেবপুরের কাষ্ঠডাঙায় ক্রেতা সেজে সোনার দোকানে ঢুকে ডাকাতি করে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের একটি দল। দলের সকলেই ছিল মধ্যবয়স্ক। দোকানে ঢুকেই তারা সিসিটিভি-র তার ছিঁড়ে দেয়। আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কর্মীদের ভয় দেখিয়ে ভল্ট খুলে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালায়।

এ বছর জুলাই মাসের প্রথমে এই কায়দাতেই ডাকাতি হয় সোদপুরের সোনার দোকানে। এ ক্ষেত্রেও দুষ্কৃতীরা ছিল মধ্যবয়স্ক। পুলিশ জানতে পারে, এখানেও ঘটনাস্থলের কিছু দূরে ছোট মালবাহী গাড়ি রেখে হেঁটে এসে অস্ত্র দেখিয়ে লুঠপাট চালায় ডাকাতেরা। কাজ শেষে চম্পট দেয় ওই গাড়িতেই। এ ছাড়া পুলিশ জেনেছে, দু’টি ঘটনাতেই দুষ্কৃতীরা একই ভাবে কথা বলছিল।

লালবাজার সূত্রে খবর, হরিদেবপুরের ঘটনায় কিছু সূত্র পেলেও তেমন এগোতে পারেননি তদন্তকারীরা। পরে সোদপুরের সঙ্গে এই ডাকাতির মোডাস অপারেন্ডি মিলে যাওয়ায় তাঁরা কথা বলেন ব্যারাকপুর পুলিশের সঙ্গে। ব্যারাকপুর পুলিশ প্রথমে গ্রেফতার করে নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা লীলা কীর্তনিয়া নামে এক মহিলাকে। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বেশ কিছু গয়না। জেরায় লীলা এই ঘটনায় তার ভাই গোলকের জড়িত থাকার কথা জানায়। গোলকের সঙ্গে বারাসতের বাসিন্দা গোপাল নামে এক জন ছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। তবে ওই দু’জনকে ধরতে না পারলেও পুলিশ গ্রেফতার করে লীলার পরিচিত অনিমেষ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে। লীলা ও অনিমেষকে জেরা করে ধরা হয় অতীশ, দেব ও টুটুন নামে তিন জনকে। জেরায় পুলিশ জানতে পারে, দু’টি ডাকাতিতেই জড়িত ছিল একই বাংলাদেশি ডাকাতদল। ধৃতেরা জেরায় জানায়, বাংলাদেশি ডাকাতদের আশ্রয় দেওয়া থেকে শুরু করে সব রকম সাহায্য করত তারা। ওই ডাকাতদের বেআইনি ভাবে পারাপার করানোর দায়িত্বও ছিল তাদের। এমনকী ডাকাতির সময়ে গাড়ি দিয়ে সাহায্যও করত ধৃতেরা। পুলিশ জেনেছে, বাংলাদেশি ডাকাতেরা প্রথমে এসে ডাকাতির এলাকা রেকি করে যেত। দু’এক দিনে কাজ হাসিল করে তাদের সঙ্গে যুক্ত এ শহরের দুষ্কৃতীদের লুঠের ভাগ দিয়ে ফিরে যেত দেশে।

কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষকর্তার দাবি, সোদপুর ও হরিদেবপুরের ঘটনায় অপরাধের প্রক্রিয়া এক। এ ছাড়া, ব্যারাকপুরের পুলিশের কাছে ধৃতদের দেওয়া তথ্যেও দুই ডাকাতির যোগ মিলেছে বলে দাবি ওই শীর্ষকর্তার। পলাতক বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের ধরা নিয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Dacoit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE