এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে তিনি ইম্ফল থেকে কলকাতায় পৌঁছচ্ছেন রবিবার দুপুরে। এবং তাঁর সঙ্গে থাকছে প্রচুর মাদক। দিন তিনেক আগে জানা গিয়েছিল ফোনে আড়ি পেতে। জানা গিয়েছিল, তাঁর নাম মহম্মদ নুর আলি।
মোবাইল থেকে মোবাইলে সেই কথোপকথনের সময় নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র অফিসারেরা আড়ি পেতে এত তথ্য জানতে পারলেও যাত্রীটিকে চেনা যাবে কী করে, তা নিয়ে খানিকটা ধন্দে ছিলেন তাঁরা। তাই এ দিন সেই বিমান কলকাতায় নামার অনেক আগেই অফিসারেরা পৌঁছে যান বিমানবন্দরে। ঠিক হয়, ইম্ফল থেকে আসা প্রত্যেক যাত্রীর বোর্ডিং কার্ড আবার খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হবে। এই কৌশলে নিশ্চয়ই ধরা যাবে নুর আলিকে।
দুপুরে বিমান নামার পরে যাত্রীরা নেমে মালপত্র নেওয়ার জন্য যথারীতি এগিয়ে যান কনভেয়ার বেল্টের কাছে। প্রথমেই এক ব্যক্তি সেখান থেকে একটি স্যুটকেস তুলে ট্রলিতে চাপিয়ে এগিয়ে আসেন। তাঁর কাঁধে ছিল আরও একটি ছোট ব্যাগ এবং সঙ্গে এক যুবক। বোর্ডিং কার্ড পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনিই মহম্মদ নুর আলি। আর তাঁর সঙ্গী যুবকের নাম তাজউদ্দিন। দু’জনেরই বাড়িই ইম্ফলে। বড় স্যুটকেসটি তাজউদ্দিনের। ছোটটি নুরের। এনসিবি সূত্রের খবর, দু’টি ব্যাগে সাত কিলোগ্রাম ৭৫০ গ্রাম হেরোইন পাওয়া গিয়েছে। তাজউদ্দিনের ব্যাগে তুলনায় অনেক বেশি হেরোইন ছিল। দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
এনসিবি-র জোনাল ডিরেক্টর সুব্রত বিশ্বাস জানান, এ দিন দু’জনের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হেরোইনের বাজারদর ৬০ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, এর আগে চার বার বিমানে ইম্ফল থেকে কলকাতায় হেরোইন পৌঁছে দিয়েছেন নুর। তাজউদ্দিন নতুন। ইম্ফলের এক ব্যবসায়ী এই কাজে তাঁদের নিয়োগ করেছিলেন। তিনিই চক্রের মূল পাণ্ডা বলে এনসিবি-র সন্দেহ।
সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘জেরায় জানা গিয়েছে, প্রতি বার এ ভাবে হেরোইন পৌঁছে দেওয়ার জন্য নুরকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হতো। এ বারেও তিনি ওই টাকা পেয়েছেন। তাজউদ্দিনও পেয়েছেন ২০ হাজার। এ ছাড়া বিমান-ভাড়া ও হোটেলে থাকা-খাওয়ার খরচ আলাদা।’’
জেরায় জানা গিয়েছে, কলকাতায় নেমে উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তির হাতে ওই হেরোইন তুলে দেওয়ার কথা ছিল নুরের। তবে টাকা লেনদেনের কথা নুর জানেন না। উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা ওই ব্যক্তি ও ইম্ফলের পাণ্ডার যোগাযোগ নম্বর তারা পেয়েছে বলে এনসিবি-র দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy