ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণের জেরে উৎপাদন এমনিতেই কমেছিল। এ বার রাজ্য সরকারের নতুন নির্দেশিকার পরে, দীর্ঘদিন বিভিন্ন কারখানাগুলি বন্ধ থাকবে বলে মনে করছেন শিল্পোদ্যোগীরা। নতুন নির্দেশিকাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েও শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা শিল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র এবং মাঝারি মাপের দশ হাজারেরও বেশি কারখানা রয়েছে। শনিবার দুপুরে রাজ্য সরকারের প্রকাশিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং ‘কন্টিনিউয়াস প্রসেস ইন্ডাস্ট্রিজ়’ (যেমন বিদ্যুৎক্ষেত্র) চালু থাকবে। বাকি সব বন্ধ। শিল্পোদ্যোগীদের একাংশের হিসেবে, এই নির্দেশ অনুযায়ী, জেলায় মাত্র শ’খানেক কারখানায় উৎপাদন চালু থাকার কথা।
কিন্তু গণ-পরিবহণ বন্ধ থাকা অবস্থায় যে কারখানাগুলি চালু থাকবে, তারা এবং যেগুলি বন্ধ থাকবে, তারাও শ্রমিকদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়া, বেতন দেওয়ার বিষয়ে কী কী ব্যবস্থা করছে? জামুড়িয়া শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার আধিকারিক সুমিত চক্রবর্তী জানান, তাঁদের কারখানায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে। তাকে কেন্দ্র করে কারখানা চালু
থাকবে। এই পরিস্থিতিতে দু’হাজার কর্মীর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্পতালুকের একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার আধিকারিক কৌশিক চক্রবর্তী জানান, তাঁদের কারখানা বন্ধ থাকবে। কিন্তু শ্রমিকদের রুজির বা বাড়ি ফেরার কী হবে, তা নিয়ে এখনই মন্তব্য করতে চাননি তিনি। পাশাপাশি, ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব স্মল ইন্ড্রাস্টিজ়’-এর সহ-সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া বলেন, ‘‘অত্যাবশ্যক ও নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদনকেন্দ্রিক শিল্প কারখানাগুলি চালু থাকবে। কিন্তু আন্তঃরাজ্য পরিবহণ বন্ধ। কাঁচামাল এবং পণ্য আমদানি-রফতানিতে সমস্যা হবে। ফলে, ওই কারখানাগুলিও কত দিন উৎপাদন চালু রাখতে পারবে, তা নিয়ে
আশঙ্কা রয়েছে।’’
যদিও তাঁদের আশঙ্কা শ্রমিক-ভবিষ্যৎ নিয়ে, জানান সিটু নেতা পঙ্কজ রায় সরকার, মনোজ দত্ত, ‘আসানসোল কোলফিল্ড কনট্রাক্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সাধারণ সম্পাদক অনল মুখোপাধ্যায়েরা। তাঁদের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশ নিয়ে কোনও আপত্তি নেই।
কিন্তু শ্রমিকদের গত বার এমন পরিস্থিতিতে (‘লকডাউন’) মাসে ছ’হাজার টাকা দিয়েছিল সংস্থাগুলি।
তা যথেষ্ট নয়। বন্ধ হওয়া কারখানাগুলির শ্রমিকেরা যাতে পুরো বেতন পান, গত বারের মতো এ বারেও যাতে ছাঁটাই না হয়, তা অবশ্যই দেখতে হবে।’’ বিষয়টি অবশ্যই তাঁরাও নজরে রাখছেন বলে জানান আইএনটিটিইউসি নেতা ভি শিবদাসনও। বিজেপি নেতা লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশ নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু শ্রমিকদের কথাটাও ভাবতে হবে। বিধি মেনে কারখানাগুলি চালু রাখার ব্যবস্থা করা হোক।’’
‘ক্ষতি’ সত্ত্বেও শ্রমিক-স্বার্থে কাজ করা হবে, আশ্বাস ‘জামুড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সম্পাদক অজয় খেতান, ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজ়’-এর কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানেরা।
জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশিকা মেনে কাজ করা হবে। সেইমতো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy