Advertisement
০৭ মে ২০২৪

সম্ভাব্য সাজার অর্ধেক সময় জেলে কাটালেই জামিন

নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শমীক ঘোষ ও শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:২০
Share: Save:

লৌহকপাটের আড়ালে সদাচরণ এবং আরও কিছু কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দণ্ডিতদের কাউকে কাউকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এ বার বিচারাধীনদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের পরে জামিনের বন্দোবস্ত হল। কোনও বিচারাধীন বন্দি তাঁর সম্ভাব্য সাজার মেয়াদের অর্ধেক বা তার বেশি সময় জেলে কাটিয়ে দিলে অবিলম্বে তাঁর জামিনের ব্যবস্থা করতে ‘স্টেট লিগ্যাল এড সার্ভিসেস অথরিটি’-কে (সালসা) নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রতি এই নির্দেশের পাশাপাশি জানিয়েছে, বন্দিদের জামিন পাওয়ার কাজ কতটা এগোল, সব জেলার ‘লিগ্যাল এড সার্ভিসেস অথরিটি’-র কাছ থেকে সালসা-কর্তৃপক্ষ তার রিপোর্ট নেবেন এবং ১০ জানুয়ারি তা ডিভিশন বেঞ্চকে জানাতে হবে।

সালসা-র আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল জানান, এ দেশের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৬এ ধারায় বলা আছে, বিচার চলাকালীন কোনও অভিযুক্ত সম্ভাব্য সাজার মেয়াদের অর্ধেক বা তার বেশি সময় জেলে থাকলে আদালত তাঁকে জামিন দেবে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে, এমন ক্ষেত্রে এই নিয়ম খাটবে না। রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন বন্দিদের অনেকে পাঁচ, সাত, দশ বা তারও বেশি বছর জেলে আছেন। তাঁদের বিচার শেষ হয়নি এবং অনেকেই সাজার মেয়াদের অর্ধেক বা তার বেশি সময় ইতিমধ্যে জেলে কাটিয়ে দিয়েছেন। সেই জন্য ডিভিশন বেঞ্চ সালসা-র সদস্য-সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে, প্রতিটি জেলার লিগ্যাল এড সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষকে দিয়ে এই ধরনের বিচারাধীন বন্দিদের চিহ্নিত করে তাঁদের জামিনের ব্যবস্থা করতে হবে।

এই ধরনের বন্দিদের চিহ্নিত করা হবে কী ভাবে? কল্লোলবাবু জানান, ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, প্রতিটি জেলায় লিগ্যাল এড সার্ভিসেস অথরিটির প্যানেলভুক্ত আইনজীবী রয়েছেন। তাঁদের মধ্য থেকে দু’জন আইনজীবী এবং দু’জন ‘প্যারা লিগ্যাল ভলান্টিয়ার’ বেছে নিয়ে তাঁদের সংশ্লিষ্ট জেলে পাঠাতে হবে। জেল-কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিচারাধীন বন্দির তালিকা নিয়ে আইনজীবীরা দেখবেন, কোন বন্দির বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কত দিনের জেল হওয়ার কথা এবং কোন কোন বন্দি সেই সাজার মেয়াদের অর্ধেক বা তার বেশি সময় জেলে রয়েছেন।

কারা সূত্রের খবর, দেশের বিভিন্ন জেলে বন্দির ভিড় উপচে পড়ায় কিছু দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, যাঁরা ১৪ বছরের বেশি জেলে আছেন, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার ও জেল প্রশাসন যেন তাঁদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে। সেই নির্দেশ পেয়ে কলকাতা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলা করে এবং এ রাজ্যের যে-সব দণ্ডিত বন্দি ১৪ বছরের বেশি জেলে আছেন, তাঁদের মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। এবং সেই মামলার শুনানিতেই বিচারাধীন বন্দিদের বিষয়টি ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Prisoners
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE