রাজ্য সরকারের দেওয়া সাইকেল চালাবে স্কুলপড়ুয়ারা। আর চালানোর জন্য ‘ফিটিং’ বা বিভিন্ন অংশ জোড়া দিয়ে সেই সাইকেল প্রস্তুত করবেন তফসিলি জাতি ও উপজাতির বেকার যুবকেরা। তার জন্য ওই যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে রাজ্য। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তফসিলি যুবকদের স্বনির্ভর করতে চাইছে সরকার।
তিন বছর ধরে স্কুলের উঁচু শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সাইকেল বিলি করার আগে তার বিভিন্ন অংশ জোড়া লাগাতে অন্য রাজ্য থেকে লোক আনতে হচ্ছে। এতে বাড়তি খরচ হচ্ছে অনেকটাই। সময়ও লাগছে বেশি।
তাই সরকার ঠিক করেছে, সাইকেল জোড়া দেওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এ রাজ্যেরই তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত যুবকদের। রাজ্যের সব ব্লক থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার তফসিলি যুবক এই প্রশিক্ষণ নিয়ে সাইকেলের বিভিন্ন অংশ জোড়া লাগানোর কাজ করবেন। প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, এতে সুফল মিলবে দু’দিক থেকে। প্রথমত, রাজ্যের কিছু যুবক কাজ পাবেন। দ্বিতীয়ত, ভিন্ রাজ্যের মিস্ত্রিদের মুখাপেক্ষী না-হয়ে জোড়া দেওয়ার কাজটা স্থানীয় যুবকদের করার দায়িত্ব দিলে সময় লাগবে অনেক কম।
আরও পড়ুন: ভোটের আগে সভা কীসের, ডোমকল নিয়ে সরব বিরোধীরা
সরকারের দাবি, ২০১৫ সালে সূচনার সময় থেকে এই প্রকল্পে ইতিমধ্যে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ৪০ লক্ষ পড়ুয়াকে সাইকেল দেওয়া হয়েছে। সেই সাইকেল হস্তান্তরের আগে ‘ফিটিং’ করাতে হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাত ও রাজস্থান থেকে লোক এনে। এ বার সাইকেল বিলির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ লক্ষ। তা বিলি করার আগেই বেকারদের প্রশিক্ষণ পর্ব সেরে ফেলতে চায় সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে খুবই আগ্রহী। তিনি চাইছেন, বেকার যুবকেরা কাজ শিখে স্বনির্ভর হোন। তাই প্রথম পর্যায়ে রাজ্যের ছ’টি জেলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। জেলাগুলি হল হুগলি, নদিয়া, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি ও দক্ষিণ দিনাজপুর।
সব মিলিয়ে কুড়ি দিনের প্রশিক্ষণ। রাজ্যের সব ব্লকেই ‘সাইকেল ডেলিভারি পয়েন্ট’ রয়েছে। তার কাছাকাছি পুরসভা ও পঞ্চায়েতের অফিসে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে। রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের এক কর্তা জানান, জোড়া লাগিয়ে একটি সাইকেল প্রস্তুত করলে ৭০ টাকা পাওয়া যাবে। এক জন যত খুশি তা করতে পারেন।