মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় বাজেটকে ‘সাধারণ মানুষের উপরে খাঁড়ার ঘা’ বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই বাজেট দিশাহীন, বিভ্রান্তিমূলক এবং কিছু অনর্থক কথার চমকে ভরা।’’
এলআইসি, বিএসএনএল, রেল, এয়ার ইন্ডিয়া-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের চেষ্টার দিকে ইঙ্গিত করে টুইটে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘পরিকল্পনা করে দেশের সরকারি সংস্থাগুলির ঐতিহ্য ও পরম্পরা ধ্বংস করতে চাইছে কেন্দ্র। এটা খুবই বেদনাদায়ক। (আর্থিক) নিরাপত্তা শেষ হয়ে যাচ্ছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এ বার কি একটি যুগেরও অবসান ঘটবে?’’
রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘এই বাজেটে দেশের অর্থনীতি ভেন্টিলেশনে চলে যাবে। অসংগঠিত ক্ষেত্র, কর্মসংস্থান এবং সমাজের সর্বনিম্ন স্তরের উন্নয়নের জন্য এই বাজেটে কিছুই বলা নেই।’’ তৃণমূলের সংসদীয় নেতৃত্বও এবারের বাজেটকে গণবিরোধী বলে অভিহিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরে মমতা ফোন করেন রাজ্যসভায় দলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। তার পরে লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাজেট বক্তৃতায় কর্মসংস্থানের কোন উল্লেখ নেই। দরিদ্রের জন্য কোনও ছাড় নেই। অসংগঠিত সংস্থার শ্রমিকদের কথাও বলা হয়নি। গণবিরোধী এই বাজেটের লক্ষ্য সব কিছু বিক্রি করে দেওয়া।’’ তৃণমূলের সংসদীয় দলের মতে, ‘‘এই বাজেট অর্থনৈতিক সঙ্কটকে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পরিণত করল। আইসিইউ থেকে অর্থনীতিকে বের করে আনতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হল এই সরকার। অসহায় সাধারণ মানুষের এখন ভগবান-ভরসা।’’
খাদ্যভর্তুকি, ১০০ দিনের কাজে বরাদ্দ ছাঁটাই, সেস বসিয়ে একতরফা রোজগার করার মতো পদক্ষেপগুলির জন্য প্রতিটি রাজ্যের লোকসান হবে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘একে তো রাজ্য থেকে বিপুল টাকা কেন্দ্র তুলে নিয়ে যায়। যা ফেরত দেওয়ার কথা, এখন তাতেও হাত দিচ্ছে। তা হলে রাজ্যগুলি চলবে কী ভাবে? কোথা থেকে রোজগার হবে?’’
নবান্নের কর্তাদের মতে, জিএসটি চালুর পর রাজ্যের হাতে কর কাঠামো নিয়ন্ত্রণে নিজস্ব ক্ষমতা আর নেই। শুধু লটারি ও মদ থেকে রাজ্যের আয় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। ফলে রাজ্যের আয়ের খাতে সব থেকে বড় অঙ্কের বরাদ্দ আসে কেন্দ্রীয় করের প্রাপ্য ৪২% টাকা এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অনুদান বাবদ। সেস বাবদ যা আয়, তার কোনও ভাগ রাজ্য পায় না। কয়েকটি প্রকল্পের বরাদ্দ ছাঁটাই হওয়ায় রাজ্যের আয় কমতে পারে। কেন্দ্র থেকে আসা অনুদান বা করের টাকা কম হলে রাজ্যের রাজস্ব ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy