Advertisement
E-Paper

লক্ষ্য নীলবাড়ি দখল, গত ১১ বছরের ‘সাফল্য’ বর্ণনার মঞ্চে ১৪ বছরের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে দিদিকে তোপ মোদীর মন্ত্রীর

মোদী সরকারের ১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে গোটা দেশেই এমন সাংবাদিক বৈঠক করছে বিজেপি। দিল্লিতে সোমবারই বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা সাংবাদিক বৈঠক করে মোদী সরকারের নানা কৃতিত্ব ও পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তার পর দিনই বঙ্গের রাজধানীতে একই কথা শোনাতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র।

Union Minister Bhupendra Yadav’s scathing attack against Mamata from dais of explaining PM Modi’s achievements in 11 years

মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকে ভূপেন্দ্র যাদব এবং সুকান্ত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৫ ১৯:৩০
Share
Save

মঞ্চ সাজানো হয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকারের ১১ বছরের ‘সাফল্য’ ফলাও করে তুলে ধরার জন্য। কিন্তু সে মঞ্চ হয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৪ বছরের সরকারের ‘ব্যর্থতা’র আখ্যানের বি‌শদ বিবরণীর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব মঙ্গলবার কলকাতায় বললেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালকে মনে রাখা হবে সন্দেশখালির জন্য, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির জন্য, সরকারি টাকার হিসেব না দেওয়ার জন্য।’’

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচার তথা আক্রমণের ‘ভাষ্য কী হবে, তা তিন দিনের ব্যবধানে উপর্যুপরি বঙ্গসফর করে বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন মোদী এবং অমিত শাহ। মঙ্গলবার মোদীর মন্ত্রী ভূপেন্দ্রও বুঝিয়ে দিলেন, বাংলায় বিজেপি এখন আদ্যোপান্ত ‘ভোটমুখী’। তাই নিজেদের কৃতিত্ব প্রচারের চেয়ে মমতাকে আক্রমণই গুরুত্ব পেল বেশি।

মোদী সরকারের ১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে গোটা দেশেই সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করছে বিজেপি। দিল্লিতে সোমবারই বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা সাংবাদিক বৈঠক করে মোদী সরকারের নানা কৃতিত্ব ও পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেছিলেন। তার পর দিনই বঙ্গের রাজধানীতে একই কথা শোনাতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ভূপেন্দ্র। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারও। পশ্চিমবঙ্গের জন্য গত ১১ বছরে মোদী সরকার কী কী করেছে এবং কোন কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণ পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার আটকে দিয়েছে, প্রথমে সুকান্ত সে ফিরিস্তি কিছুটা তুলে ধরেন। এর পরে আসে ভূপেন্দ্রর পালা। কিন্তু নিজেদের সরকারের ‘সাফল্য’ সম্পর্কে বিশদে বলার আগে তিনি মমতার সরকারের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে বলতে শুরু করেন। ভূপেন্দ্র দাবি করেন, মমতার সরকারকে মনে রাখা হবে সন্দেশখালির ঘটনার জন্য, এসএসসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির জন্য। শুধু এসএসসি দুর্নীতির অভিযোগ তুলেই ভূপেন্দ্র ক্ষান্ত হননি। তিনি বলেন, ‘‘সিএজি রিপোর্ট বলছে, বাংলায় দু’লক্ষ কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পে কাজ শেষের শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। এই অর্থ কোথায় গেল? এই টাকা কে লুটল?’’

তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারকে একদফা আক্রমণের পর ভূপেন্দ্র মোদী সরকারের ‘অবদান’-এর প্রসঙ্গ তোলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে এমস দিয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে বানিয়েছে। নিউ আলিপুরদুয়ার, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের সংস্কার করা হয়েছে। ‘ডেডিকেটেড করিডর’ দিয়েছে। আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে ‘নগর গ্যাস সরবরাহ’ প্রকল্প হচ্ছে ওই শহরগুলিকে দূষণমুক্ত, নিরাপদ ও সস্তা জ্বালানি দেওয়ার জন্য।’’ তার পরেই ফের রাজ্য সরকারকে আক্রমণে চলে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য প্রধানমন্ত্রী রোডম্যাপ তৈরি করেছেন। কিন্তু সেই রোডম্যাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্রিয়, ইতিবাচক, গঠনমূলক মানসিকতার রাজ্য সরকার প্রয়োজন। শুধু তোষণের রাজনীতি, শুধু মহিলাদের উপর অত্যাচার আর বাংলা থেকে মেধার বহির্গমন, এই সবই হল সরকারের অপশাসনের নমুনা। এগুলো বদলানো জরুরি।’’

সন্দেশখালির পাশাপাশি মালদহ এবং মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক ঘটনার কথাও ভূপেন্দ্রের বক্তব্যে এসেছে। তবে ঘুরেফিরে আক্রমণের সুর সেই খাতেই বয়েছে, যা গত ২৯ মে মোদী এবং ১ জুন শাহ নির্দিষ্ট করে দিয়ে গিয়েছেন। তোষণ তথা সাম্প্রদায়িকতা, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ, মহিলাদের উপরে অত্যাচার, দুর্নীতি, অপশাসন— মঙ্গলবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এই পাঁচ তিরেই মমতা বিঁধতে চেয়েছেন ভূপেন্দ্র। যা থেকে মোটামুটি স্পষ্ট যে, ২০২৬ সালে নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে বিজেপি এই পাঁচ বিষয়কে মমতার বিরুদ্ধে ‘হাতিয়ার’ করে তুলতে চাইবে।

৫০০ বছরের পুরনো বিবাদ মিটিয়ে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ, বঙ্গসন্তান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্ন সফল করে জম্মুকাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার এবং ‘অপারেশন সিঁদুরে’র মাধ্যমে পাকিস্তানকে ‘ঘরে ঢুকে মারা’র কথা উল্লেখ করতে মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য ভোলেননি। তার সঙ্গেই বলেছেন, মমতার সরকার বাংলার গণপরিবহণ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করেছে।

১৯৮৯ সালে সপরিবার কলকাতায় এসে প্রথম কোনও ভারতীয় শহরে মেট্রো রেল দেখার বিষয়ে ভূপেন্দ্র স্মৃতিচারণ করেছেন। মেট্রো হোক বা ট্রাম হোক অথবা সুলভ ট্যাক্সি পরিষেবা, যে কলকাতার গণ পরিবহণ ভারতে সেরা ছিল, সেই কলকাতার গণ পরিবহণ ব্যবস্থাকে মমতা ‘ধ্বংস’ করে দিয়েছেন বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি। পাশাপাশি, সুকান্তের বক্তব্য, মমতার ‘অসহযোগিতার কারণে’ বিভিন্ন মেট্রো প্রকল্পের অগ্রগতি আটকে রয়েছে। যদিও বিজেপি সূত্রের খবর, অন্তত একটি রুটে মেট্রো চলাচল প্রধানমন্ত্রী এ মাসেই উদ্বোধন করতে পারেন। জুনের তৃতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী মোদী আবার বঙ্গ সফরে আসতে পারেন বলে জল্পনা। সে সফরে তিনি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্ল্যানেড-শিয়ালদহ অংশের পরিষেবার উদ্বোধন করতে পারেন।

BJP West Bengal Politics Sukanta Majumdar PM Modi CM Mamata Banerjee West Bengal Assembly Election 2026

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।