E-Paper

বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ, শুভেন্দুর নিশানায় তৃণমূল

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানান, মৃতের পরিবারের তরফে ওই বধূ-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:০২
bjp

বিজেপি কর্মী শুভদীপ মিশ্র। —নিজস্ব চিত্র।

রাতে ফেসবুকে ‘জীবনে চলার পথে হার মানা’-র বার্তা দিয়েছিলেন। পরের দিন সকালে গামছায় হাত বাঁধা অবস্থায় গাছ থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল তাঁর।

বুধবার বাঁকুড়া জেলার গঙ্গাজলঘাটির নিধিরামপুরে বিজেপির পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী শুভদীপ মিশ্রের (২৭) অস্বাভাবিক মৃত্যুতে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তাঁকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজের এক্স হ্যান্ডলে অভিযোগ তুলেছেন। সিবিআই তদন্তও চেয়েছেন তিনি। বিজেপির স্থানীয় বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি আবার পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ তুলে দেহ উদ্ধারে বাধা দেন। পরে থানার সামনে তাঁরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।

যদিও মৃতের কাকা তথা অভিযোগকারী গৌতম মিশ্র বলেন, “স্থানীয় এক বধূর সঙ্গে মেলামেশা ছিল শুভদীপের। কিছু দিন আগে তাঁরা দু’জনে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। পরে ওই বধূ ফিরে আসেন। শুভদীপ ফেরেন মঙ্গলবার। শুভদীপ গ্রামে ফিরলে মারধরের হুমকি দিচ্ছিল ওই বধূর স্বামী ও পরিজনেরা। তবে ওরা এ ভাবে ওকে খুন করে দেবে, ভাবিনি।” ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী এ দিন ওই বধূর উপর চড়াও হয়। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্রের দাবি, ‘‘বিজেপি মিথ্যে বলে মানুষের মধ্যে শুধুই ভেদাভেদ তৈরি করে। আমরা ঘটনার যথাযথ তদন্তের
দাবি জানাচ্ছি।’’

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানান, মৃতের পরিবারের তরফে ওই বধূ-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মৃতের ফেসবুক পোস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুন না আত্মহত্যা, তা ময়না-তদন্তের রিপোর্টেই জানা যাবে।

শুভেন্দু অবশ্য নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘দেখবেন দু’টো হাত বাঁধা। হাত বেঁধে ঝোলা সম্ভব নয়। ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা রাজনৈতিক খুন। আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি করছি।’ তিনি আরও দাবি করেন, পুলিশ ‘রাজনৈতিক প্রভুদের’ সন্তুষ্ট করতে শুভদীপের খুনি তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের রক্ষা করতে এবং প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করবে। পাশাপাশি গত অক্টোবরে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে শুভেন্দুর দাবি, আত্মহত্যায় প্ররোচনা, ধর্ষণ, বধূ নির্যাতন, পণের দাবিতে বধূ হত্যা, খুনের মামলায় গ্রেফতারির ব্যাপারে থানাগুলিকে পুলিশ সুপার সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করছেন।

শুভেন্দুর জবাবে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সমস্ত ঘটনাকে রাজনীতিতে টেনে আনা স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে! অত্যন্ত দুঃখজনক এই মৃত্যুর ঘটনা। কিন্তু মৃতের পরিবারের লোকেরাই বলছেন যে, ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপড়েনেই খুনের ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত হলে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’

জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “কেউ যাতে আইনের অপব্যবহার করতে না পারে, তাই থানাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। নিয়মের বাইরে গিয়ে কিছু করা হয়নি।” তিনি জানান, এক মাস পুরনো ওই নির্দেশিকার সঙ্গে এ দিনের ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই।

বিজেপি বিধায়ক চন্দনা আবার পুলিশি হেনস্থার নালিশ করেছেন। যদিও এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ হয়নি বলে পুলিশ সুপার জানান। তিনি আরও জানিয়েছেন, অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

unnatural death BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy