প্রতীকী ছবি।
মরা গাঙে জোয়ার আনতে একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করে চলেছে গ্রন্থাগার দফতর। কিন্তু ওই সব প্রকল্প থেকে আদৌ কতটা সুবিধা পেয়েছেন সাধারণ মানুষ? এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে কতটা এগিয়েছেন রাজ্যের ২৪৮০টি সরকারি গ্রন্থাগারের কর্মীরা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই রাজ্যের সমস্ত গ্রন্থাগারের হাল-হকিকত খুঁটিয়ে দেখতে উদ্যোগী হল দফতর।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এই কাজে নিজের দফতরের কর্তাদের পাশ কাটিয়ে গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি সংস্থাকে সমীক্ষা করার দায়িত্ব দিয়েছেন দফতরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা থেকে শুরু করে রাজ্যের সব জেলায় সমীক্ষা করে অগস্টের মধ্যে রিপোর্ট দেবে ওই সংস্থা। সেই রিপোর্ট দেখে কর্মী নিয়োগ সহ সংস্কারের পরবর্তী নানা পদক্ষেপ করবে দফতর। তবে কোনও গ্রন্থাগারের কর্মীর বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা পড়লে কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দফতরের কর্তারা।
গ্রন্থাগার দফতর সূত্রের খবর, প্রযুক্তির সঙ্গে দৌড়তে গিয়ে গ্রন্থাগারমুখী মানুষের সংখ্যা হু হু করে কমে গিয়েছে। কোথাও পরিষেবার সুযোগ থাকলেও চাহিদা নেই, কোথাও চাহিদা থাকলেও পরিষেবায় গাফিলতির অভিযোগ উঠত। কিন্তু বছরখানেক আগে থেকে রাজ্যের সরকারি গ্রন্থাগারগুলিকে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা করে সরকার। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের পরে সেই কাজে আরও গতি আসে বলে জানান দফতরের এক কর্তা। এর জন্য কয়েক কোটি টাকাও বরাদ্দ হয়। গ্রন্থাগারের চরিত্র বদলে সেখান থেকে চাকরির তথ্য দেওয়ার জন্য করা হয় ‘তথ্যকেন্দ্র’। কোন জমিতে কিসের চাষ ভালো হয়, সে বিষয়েও এলাকার মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় গ্রন্থাগারের কর্মীদের উপরে। একেবারে তৃণমূল স্তরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য গ্রন্থাগারগুলিকে অন্যতম মাধ্যম করার পরিকল্পনা করা হয়।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এগুলি কি আদৌ মেনে চলা হচ্ছে?
দফতরের এক কর্তা জানান, সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে গ্রন্থাগারে কর্মী নিয়োগ করা হবে। কিন্তু কোথায় কত লোকের প্রয়োজন, সেই তথ্য দফতরে থাকলেও সরেজমিন তা খতিয়ে দেখতে চাইছেন মন্ত্রী। যে কারণেই এই সমীক্ষা। ওই কর্তা জানান, সমীক্ষক দলের সঙ্গে দফতরের চুক্তি হয়েছে, অগস্টের মধ্যে রিপোর্ট দেবেন তাঁরা। মোট ৫০টি দলে ভাগ হয়ে এই কাজ করবেন।
ইতিমধ্যেই কলকাতায় কাজ শুরু করেছে ওই সংস্থা। কত কিলোমিটারের ব্যবধানে গ্রন্থাগারগুলি রয়েছে, প্রথমে সেই তথ্য পেতে চায় দফতর। সেগুলির উপরে কেউ নির্ভর করেন কি না বা গ্রন্থাগারের কর্মীরা সাধারণ মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেন কি না, তার বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করবে ওই সংস্থা। গ্রামের দিকের বহু গ্রন্থাগারের বেহাল দশার কথা কর্তাদের অজানা নয়। এ বার সেগুলিই খতিয়ে দেখা হবে। অর্থাৎ উন্নয়নের খাতে অর্থ বরাদ্দ থেকে কর্মী নিয়োগ, সংস্কার থেকে তিরস্কার— সবই নির্ভর করছে ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘এত বড় সমীক্ষা আগে কখনও হয়নি। এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলে রিপোর্ট তৈরি করা হবে। তার ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy