মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
চাহিদা অনুযায়ী জোগান নেই। যতটুকু মিলছে, তা দিয়েই কোনও মতে টিকা কর্মসূচি চলছে রাজ্যে। তার মধ্যেই অসাধু চক্রের কার্যকলাপ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন জায়গায়। তাই টিকাকরণে চূড়ান্ত সতর্কতা নিতে বুধবার নির্দেশিকা-বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যে টিকার জোগান কম কেন, সেই প্রশ্ন তুলে এ দিনেও দিল্লিতে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “রাজ্যে প্রথম ডোজ় হয়েছে মাত্র দু’কোটি। দরকার ১৪ কোটির। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আগে আমাদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করতে হবে। কিন্তু ওরা (কেন্দ্র) যে-ভাবে টিকা পাঠাচ্ছে, তাতে ১০ নম্বর ঢেউ চলে এলেও দেওয়া শেষ হবে না। রাজ্য সরকার যদি প্রতিষেধক না-পায়, তা হলে দেবে কোথা থেকে?”
টিকার আকাল থাকলেও দক্ষ কর্মীদের কাজে লাগিয়ে অপচয় রুখে তারা কয়েক লক্ষ ডোজ় টিকা বাঁচিয়েছে বলে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর দাবি। একটি ভায়াল থেকে অন্তত ১১ জনকে টিকা দেওয়ার বিষয়টিও জানানো হয়েছে এ দিনের বিজ্ঞপ্তিতে। স্বাস্থ্য শিবিরের সন্দেহ, সর্বত্র সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। ১০ মিলিগ্রামের একটি ভায়াল থেকে অন্তত ১১ জনকে টিকা দিতে গেলে দক্ষতা ও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। পূর্বের ‘এসওপি’ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ন্যূনতম টিকাও নষ্ট করা যাবে না। আর আদৌ টিকা নষ্ট না-করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলেই প্রতিটি ভায়া, থেকে অন্তত ১১ জনকে টিকা দেওয়া সম্ভব। কারণ, প্রস্তুতকারী সংস্থা সব সময়েই প্রতিটি ভায়ালে কিছু পরিমাণ টিকা বেশি দিয়ে দেয়। যাতে ব্যবহারের সময় সামান্য নষ্ট হলেও সমস্যা নাহয়।
সম্প্রতি ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পরেই রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার বিষয়ে এক গুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তার পরেও কোল্ড চেন পয়েন্ট (সিসিপি) থেকে কোভিড ভ্যাকসিন সেন্টার (সিভিসি) সর্বত্রই কিছু ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে যাচ্ছে বলে স্বাস্থ্য শিবিরের পর্যবেক্ষণ। সম্প্রতি ডায়মন্ড হারবারের মশাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক ফার্মাসিস্টকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্বাস্থ্য দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সিসিপি ও সিভিসি-তে সতর্কতার অভাবেই টিকা নষ্ট এবং অসাধু কাজকর্মের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রাজ্যের নির্দেশ, কত টিকা ব্যবহার করা হল, কত ভায়াল পুনরায় সিসিপি-তে ফেরত গেল— সবই নথিভুক্ত করতে হবে। টিকা দেওয়া শেষ হলে খাতার সঙ্গে স্টক মিলিয়ে দেখেতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীকে। সব টিকা কেন্দ্রে পাঁচ সদস্যের কমিটি থাকাও বাধ্যতামূলক। স্বাস্থ্যসচিবের এই ‘এসওপি’ কলকাতা পুরসভা, সব জেলাশাসক, মেডিক্যাল কলেজ, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy