গুলিতে মারা যাওয়া বছর নয়েকের এক স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর প্রতিবাদে ক্যানিং-এ সভা করতে গিয়েছিলেন ‘আক্রান্ত আমরা’র সদস্যেরা। সেই প্রতিবাদ সভাতে হামলা চালানো হয়। আর তাতেই মাথা ফাটল অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ একাধিক সদস্যের। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ক্যানিংয়ে একটি প্রচারসভাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেই ঘটনায় জখম হন অম্বিকেশ মহাপাত্র, মইদুল ইসলাম, খোকন দাস, অমলেন্দু বেরা, অরুণাভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং অলোক প্রামাণিক নামে ‘আক্রান্ত আমরা’র কয়েক জন সদস্য। যুব তৃণমূলেরও কয়েক জনের জখম হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতদের ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে ক্যানিং থানার পুলিশ।
বাসন্তী-কাণ্ডে নিহত স্কুল পড়ুয়া রিয়াজুল মোল্লা-সহ আরও দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন ক্যানিংয়ে অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছিলেন ‘আক্রান্ত আমরা’র সদস্যেরা। সেই মতো এ দিন সকাল থেকেই ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডের কাছে মাইক নিয়ে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, মইদুল ইসলাম, অরুণাভ গঙ্গোপাধ্যায়, মন্দাক্রান্তা সেন-সহ আরও কয়েক জন।
পুলিশ জানিয়েছে, এই প্রচারের সময়েই এক তৃণমূল যুব নেতার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। তৃণমূলের দাবি, মাইক প্রচারের নামে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছিলেন তাঁরা। তাই যুব তৃণমূলের কর্মীরা বাধা দিতে গেলে বচসা শুরু হয়। সেই বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। তবে, তৃণমূলের এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। তিনি বলেছেন, ‘‘বাসন্তী কাণ্ডে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন আমরা অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছিলাম। আমাদের সভা বানচাল করতেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এ দিন হামলা চালিয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
সুটকেসে তরুণীর দেহ, দুর্গাপুরে আটক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার
ধর্মতলায় সভা ধর্ম বদলের, সঙ্গে গুন্ডামি
গত মাসেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরে রক্তাক্ত হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী। স্থানীয় একটি মেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী। সংঘর্ষ চলাকালীন গুলি লেগে মৃত্যু হয় রিয়াজুল মোল্লা নামে ৯ বছরের এক স্কুল পড়ুয়ার। হাসান লস্কর নামে এক তৃণমূল কর্মীরও মৃত্যু হয়। গুলি লেগে জখম হন এক পুলিশ কর্মী-সহ অন্তত সাত জন। ‘আক্রান্ত আমরা’-র তরফে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনার পর প্রায় এক মাস কেটে গিয়েছে, কিন্তু কোনও গ্রেফতারির খবর মেলেনি। সেই ঘটনারই প্রতিবাদে ক্যানিংয়ে কয়েক দিন ধরে মাইক প্রচার এবং অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছিলেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবারও তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে ‘আক্রান্ত আমরা’র কয়েক জনের বচসা বেধেছিল। দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির খবরও পাওয়া গিয়েছে। তবে এ দিনের ঘটনা আরও বড় আকার নিয়েছে।
মহকুমা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সভা করার জন্য কোনও আবেদনপত্র জমা দেয়নি ‘আক্রান্ত আমরা’। পুলিশের অনুমতি ছাড়াই এ দিন তাঁরা মাইক প্রচার শুরু করে দেয়। তবে, সেই দাবি অস্বীকার করেছেন ‘আক্রান্ত আমরা’-র সদস্যেরা।