অমর্ত্য সেন। —ফাইল চিত্র।
অমর্ত্য সেনকে আক্রমণের প্রশ্নে নিজেদের আইনজীবীর বক্তব্যের দায় নিল না বিশ্বভারতী। শনিবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে বেনজির আক্রমণ করেন বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাস। রবিবার একটি বিবৃতি দিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, আদালতের ভিতরে অথবা বাইরে কোনও ক্ষেত্রেই কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করার কোনও নির্দেশ বিশ্বভারতী দেয়নি। এতে বিশ্বভারতীর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। তবে এ দিনও নিজের মন্তব্য থেকে সরেননি সুচরিতা।
শনিবার সিউড়িতে, বীরভূম জেলা ও দায়রা আদালতে জমি সংক্রান্ত মামলার শুনানির পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে সুচরিতা বলেন, ‘‘মিথ্যাচার করেছেন অমর্ত্য সেন। ভারতের উন্নয়নেও অবদান নেই তাঁর। বিশ্বভারতীতে এক দিনও ক্লাস নেননি। অথচ দেশের নাম যিনি বিশ্বের দরবারে নিয়ে গেলেন, সেইরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠানের জমিকেই হাতাতে চাইছেন অমর্ত্য সেন৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উনি যদি মনে করেন গুরুদেবের জমি নেবেন, তা ওঁর অসভ্যতার পরিচয়।’’
বিশ্ববিখ্যাত অর্থনীতিবিদ সম্বন্ধে বিশ্বভারতীর কৌঁসুলির এমন আক্রমণের পর সমাজের সব স্তর থেকে নিন্দা জানানো হয়। শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের বড় অংশ দাবি করেন, প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আক্রমণের সুরই শোনা যাচ্ছে বিশ্বভারতীর আইনজীবীর বক্তব্যে। অমর্ত্যের মতো ব্যক্তিত্বকে এমন ব্যক্তিগত আক্রমণ করায় বিশ্বভারতীর ভাবমূর্তিই খারাপ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। এ দিনের বিবৃতিতে সেই অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়েছে বিশ্বভারতী।
রবিবার বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে বলেন, “বিশ্বভারতী স্পষ্ট করতে চায় যে, বিশ্বভারতী কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণের জন্য কোনও নির্দেশ জারি করেনি বা আদালতের বাইরে কোনও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে জনসমক্ষে কোনও বিবৃতি দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।’’ যা ঘটেছে তার কোনও দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এবং যুগ্ম কর্মসচিব (আইনি)গ্রহণ করছেন না বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।
বিশ্বভারতীর বিবৃতি দিয়ে নিজেদের আইনজীবীর থেকে দূরত্ব রাখলেও তা নিয়ে সরব হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ভিবিইউএফএ। সংগঠনের সভাপতি, অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “বিশ্বভারতীর আইনজীবী হিসেবে সুচরিতা বিশ্বাসকে সরানোর দাবি আমরা আগেই জানিয়েছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয় থাকায় এখন তাঁদের আইনজীবীর বক্তব্যের দায়ভারতাঁরা অস্বীকার করতে পারেন না। আমরা আবারও এই আইনজীবীকে সরানোর দাবি তুলছি।”
তবে বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাস নিজের মন্তব্যে এ দিনও অনড় থেকেছেন। তিনি বলেন, “আমার ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছি। আমি আজও বলছি ওঁর (অমর্ত্য) ভারতে কোনও অবদান নেই। গুরুদেবের সম্পত্তি রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। তাই আমরা লড়ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy