শুরু হয়ে গিয়েছে দেওয়াল লিখন।
বাম-কংগ্রেস জোট প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। এমনটাই দাবি করছেন দু’দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ। এমনকী জোট হলে কে কোন কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে পারে সেই হিসেব কষাও অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। যে কারণে জোট বা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন কেন্দ্রে দেওয়াল লিখতে শুরু করেছেন উৎসাহী কর্মীরা। লক্ষণীয়, যে কেন্দ্রে সিপিএমের দেওয়াল লেখা হচ্ছে সেই কেন্দ্রে কংগ্রেসের দেওয়াল লেখা হচ্ছে না। এবং এর উল্টোটাও সত্যি। যা বস্তুত ভিতরে ভিতরে একটা সমঝোতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সমশেরগঞ্জে যেমন বাম প্রার্থীর হয়ে দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে। জঙ্গিপুরেও কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে দেওয়াল লিখতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন দলের কর্মীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের কথায়, “তৃণমূলের বিরুদ্ধে এ জেলাতেও সামগ্রিক জোট নিশ্চিত। ইতিমধ্যেই সেই বার্তা দলের কর্মীদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। মানসিক ভাবে দুই দলই এখন প্রস্তুত। তবে জোটের চূড়ান্ত ঘোষণা যা করার করবেন রাজ্য কমিটির নেতারাই।”
একই কথা বলছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হকও। তিনি বলেন, “বামেদের সঙ্গে যে জোট হচ্ছে, তা একশো শতাংশ নিশ্চিত। আমার সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর রবিবারও কথা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলায় দলীয় কর্মীদের মধ্যেও জোট নিয়ে কোনও সংশয় নেই। বাম ও কংগ্রেস কেউ কাউকে চাপ দিচ্ছে না কোনও বিশেষ আসন নিয়ে। তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কে কোথায় বেশি শক্তিশালী, তা নিয়ে মত বিনিময় এখনও চলছে। কিন্তু জোট প্রক্রিয়ায় সেটা কোনও বাধা হয়ে উঠবে না।”
ইতিমধ্যেই সমশেরগঞ্জে জোট হচ্ছে বার্তা পেয়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন সিপিএমের কর্মীরা। ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক নিজে প্রায় প্রতিদিনই সমশেরগঞ্জে এসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকও সারছেন। ফরাক্কাতেও সিপিএম নেতারা কংগ্রেসের সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোট বার্তা ঘোষণা করেছেন। সেই মঞ্চে হাজির ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আবুল হাসনাত খান নিজে। জঙ্গিপুর আসনেও কংগ্রেসের হয়ে দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে। তবে কোনও জায়গাতেই এখনও প্রার্থীর নাম ব্যবহার করা হয়নি। নামের জায়গা ফাঁকা রেখে দেওয়ালে লেখা হয়েছে, বাম অথবা কংগ্রেস প্রার্থীকে জয়ী করুন।
জেলা কংগ্রেস ও সিপিএমের সূত্রে জানা গেছে, জোট হলেও ৩টি আসন নিয়ে এখনও মত বিনিময় চলছে দুই দলের মধ্যে। কংগ্রেস চাইছে ডোমকল। তাদের যুক্তি, বিধানসভায় সিপিএম জিতলেও লোকসভায় ৯০ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে প্রায় ৩৩ হাজার ভোটে এগিয়েছিল কংগ্রেস। তাই সিপিএম আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দিক। বিনিময়ে জঙ্গিপুর আসনটি থাকুক সিপিএমের। কারণ সেখানে প্রায় ৮৫০০ ভোটে এগিয়েছিল সিপিএম। এই সূত্র মেনেই রানিনগর আসনে গত লোকসভা নির্বাচনে এগিয়ে থাকার সুবাদে, ওই আসনটি দাবি করেছে বামেরা। সমশেরগঞ্জ চাইছে কংগ্রেস। তবে এ বিষয়ে এখনও শেষ সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি কোনও দলই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy