ফাইল চিত্র।
রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে বিবাদে জড়াল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে অভিযোগ করেন, আধাসেনা নিয়ে গত কয়েক দিনে তাঁর সঙ্গে ছ’বার কথা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সময় মতো বাহিনী পেলে পাহাড়ের অবস্থা এত খারাপ হতো না বলেও দাবি তাঁর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পাল্টা বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রশ্নে মমতার অভিযোগ খণ্ডন করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘পাহাড়ে সময় মতো আধাসেনা পাওয়া গেলে গোলমাল এত বাড়ত না। প্রশাসন আর রাজনীতি সব সময় আলাদা করে দেখেছি। এরা তো প্রশাসনে বসে রাজনীতি করছে!’’ একই সঙ্গে রাজ্যের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের সময় যে চার কোম্পানি সিআরপিএফ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তার পরিবর্ত হিসেবে সীমা সুরক্ষা বল (এসএসবি), মহিলা বাহিনী পাঠানো হয়েছে। সংখ্যার হিসেবে ঠিক থাকলেও পাহাড়ের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে এই বাহিনী মোটেই কার্যকর নয়। যদিও রাজ্যের বক্তব্য উড়িয়ে পরিস্থিতি সামলাতে না পারার জন্য মমতা-প্রশাসনকেই দায়ী করে দলীয় মঞ্চ থেকে এ দিন সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
কেন্দ্রের অভিযোগ, প্রথমে রাজ্যের দাবি ছিল, বসিরহাটে আধাসেনা চাই। কিছু পরেই বলা হয়, চাই না। পরক্ষণেই বক্তব্য পাল্টে রাজ্য ফের বসিরহাটেই আধাসেনা চায়। শেষ পর্যন্ত নবান্নের অবস্থান হল, বসিরহাট আপাতত শান্ত কিন্তু দার্জিলিং অশান্ত, তাই এখন আধাসেনা চাই পাহাড়ে। গত কয়েক দিন ধরে আধাসেনা নিয়ে নবান্নের এই চার দফা অবস্থান বদলে নাকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কোথায়, কোন বাহিনী, কী ভাবে কাজে লাগানো হবে, সেই প্রশ্নে বিতর্ক বাধায় কেন্দ্রীয় বাহিনী শেষ অবধি এখনও আসেনি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, বসিরহাট প্রশ্নে রাজ্য চাইতেই কেন্দ্রের হাতে থাকা অতিরিক্ত চার কোম্পানি আধাসেনা পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া হয়। দু’দিন বাদে কেন্দ্র যখন আরও চার কোম্পানি সেনা পাঠাতে চায়, তখন রাজ্য জানায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই নতুন করে বাহিনীর দরকার নেই। তার পর থেকে ঘনঘন অবস্থান বদল করেছে তারা। এক কেন্দ্রীয় কর্তার কথায়, ‘‘এক দিকে বাহিনী ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর অন্য দিকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করছেন কেন্দ্র নাকি বাহিনী পাঠাচ্ছে না!’’ মন্ত্রকের প্রশ্ন, রাজ্যের নিজস্ব বাহিনী কেন কাজে লাগানো হচ্ছে না? অহেতুক দোষারোপ না করে বরং হাতে থাকা বাহিনীকে মোতায়েন করুক রাজ্য। যার জবাবে নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘চারটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। আসলে কেন্দ্র নোংরা খেলা খেলছে।’’
দলের মঞ্চ থেকেও এ দিন মমতার সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রকৃত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টে হিংসাকেই প্রশয় দিচ্ছেন মমতা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy