Advertisement
E-Paper

ওয়েব্রিজ বসানোয় লোকসান, ঘুরপথে ট্রাক, ঘোল খাচ্ছে এনএইচআই

শুরুতেই হোঁচট! ‘ফাঁকির কড়ি’র দেখা নেই। প্রতিদিনের ‘রোজগার’ও কমছে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের দু’প্রান্তে ‘ওয়েব্রিজ’ (যেখানে পণ্য-সহ গাড়ির ওজন মাপা হয়) বসানোয় লোকসানের হিসেব কষতে হচ্ছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে (এনএইচএআই)। পণ্যবাহী লরি-ট্রাক তাদের সঙ্গে ‘চোর-পুলিশ খেলা’ শুরু করে দিয়েছে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৮
লরি-ট্রাকের বাড়তি মালবহন রুখতে টোলপ্লাজার সামনে বসানো হয়েছে এই ওয়েব্রিজ। ডানকুনিতে দীপঙ্কর দে-র তোলা ছবি।

লরি-ট্রাকের বাড়তি মালবহন রুখতে টোলপ্লাজার সামনে বসানো হয়েছে এই ওয়েব্রিজ। ডানকুনিতে দীপঙ্কর দে-র তোলা ছবি।

শুরুতেই হোঁচট!

‘ফাঁকির কড়ি’র দেখা নেই। প্রতিদিনের ‘রোজগার’ও কমছে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের দু’প্রান্তে ‘ওয়েব্রিজ’ (যেখানে পণ্য-সহ গাড়ির ওজন মাপা হয়) বসানোয় লোকসানের হিসেব কষতে হচ্ছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে (এনএইচএআই)। পণ্যবাহী লরি-ট্রাক তাদের সঙ্গে ‘চোর-পুলিশ খেলা’ শুরু করে দিয়েছে।

জরিমানার মাধ্যমে লরি-ট্রাকের বাড়তি মাল বহন (ওভারলোডিং) রুখতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ডানকুনি এবং পালসিট টোলপ্লাজার সামনে গত মাসের গোড়ায় প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ করে ওয়েব্রিজ বসান জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সেই ওয়েব্রিজই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়েছে তাঁদের। কারণ, জরিমানা এড়াতে অন্য রাস্তায় লরি-ট্রাক নিয়ে পিঠটান দিচ্ছেন চালকেরা। তার জেরে ‘টোল’ আদায় কমছে দুই টোলপ্লাজাতেই। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ মানছেন, আগে দুই টোলপ্লাজাতেই প্রতিদিন গড়ে ৩১ লক্ষ টাকা আদায় হতো। ওয়েব্রিজ চালু করার পরে দু’জায়গা থেকেই প্রতিদিন ৩০ শতাংশ ‘টোল’ কম আদায় হচ্ছে। প্রতিকার চেয়ে তাঁরা রাজ্য পুলিশের ডিজি-র দ্বারস্থ হয়েছেন।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক শীর্ষ কর্তা জানান, সড়ক আইন অনুযায়ীই জরিমানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু অনেক পণ্যবাহী গাড়িই ‘টোল’ ফাঁকি দিতে ঘুরপথ নিচ্ছে। তাদের ঠেকানোর উপায় খোঁজা হচ্ছে।

দ্রুত গতির ওই সড়কে পণ্যবাহী গাড়ির চাপ কম নয়। সব গাড়িকেই ‘টোল’ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বর্তমানে ছ’চাকার ট্রাকের জন্য ‘টোল’ নেওয়া হয় ২৪৫ টাকা। ১০ চাকার ট্রাকের জন্য ২৭০ টাকা। ওই ‘টোল’ দিয়ে ছ’চাকার ট্রাক সর্বাধিক ৮ টন এবং ১০ চাকার ট্রাক ১৬ টন মাল নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি পণ্য নিলে জরিমানা। তার জন্যই ওয়েব্রিজ। কিন্তু গোড়াতেই বিপত্তি। ওয়েব্রিজ এড়াতে দু’প্রান্তেই টোলপ্লাজার আগে-পরে অন্য রাস্তা ধরছে লরি-ট্রাক। তার পরে কিছুটা রাস্তা গিয়ে ওয়েব্রিজ পার হয়ে সেই সব লরি-ট্রাক ফের দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ফিরে আসছে।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষেরই একটি সূত্রের দাবি, কলকাতার দিক থেকে যে সব লরি-ট্রাক বাড়তি মাল নিয়ে যাচ্ছে, তার বেশির ভাগই ডানকুনি টোলপ্লাজার আগে এফসিআই মোড়ের কাছ থেকে দিল্লি রোড ধরে সরাসরি শ্রীরামপুর বা বৈদ্যবাটি হয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরছে। অন্য দিকে, দুর্গাপুরের দিক থেকে লরি-ট্রাক টোলপ্লাজার কিছুটা আগে ইন্টারচেঞ্জ রোড হয়ে দিল্লি রোড বা জি টি রোড ধরে মেমারি-রসুলপুর হয়ে জৌগ্রাম বা মগরার কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে উঠছে। এই প্রবণতা বাড়তে থাকায় দু’টি রাস্তাতেই গাড়ির ভিড় বাড়ছে, যানজট হচ্ছে। প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে বলেও অভিযোগ।

লরি-ট্রাকে বাড়তি মাল বহন রুখতে গত বছরই রাজ্য সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সড়কগুলিতে নজরদারি শুরু করে। লক্ষ্য ছিল তিনটি। সরকারের আয় বাড়ানো, দুর্ঘটনা কমানো এবং রাস্তার মান ভাল রাখা। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই সেই নজরদারিতে শিথিলতা এসেছে বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকারের সেই ভাবনাকেই প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজে লাগায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শুরুতেই তা ধাক্কা খেল। চিহ্নিত করা এলাকাগুলি ছাড়াও অন্য কোনও জায়গা দিয়ে লরি-ট্রাক পালাচ্ছে কি না, এখন তা চূড়ান্ত ভাবে খতিয়ে দেখার কাজ করছে তারা।

তথ্য সহায়তা: সৌমেন দত্ত।

NHI way bridge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy