E-Paper

জিএসটি কমলে রাজ্যের ক্ষতি ১০ হাজার কোটি

রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সামনে প্রস্তাব রেখেছে কেন্দ্র, জিএসটি ব্যবস্থায় এখন থেকে মূলত দু’টি করের হার থাকবে— ৫% ও ১৮%। জিএসটি-র ১২% হার তুলে দেওয়া হবে। অধিকাংশ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে জিএসটি-র বোঝা ১২% থেকে কমে ৫% বা শূন্যে নেমে আসবে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৫ ০৫:৩৪

—প্রতীকী চিত্র।

জিএসটি-র হার কমানো হলে পশ্চিমবঙ্গের জিএসটি থেকে আয় পাঁচ ভাগের এক ভাগ কমে যাবে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আশঙ্কা করছে। বিধানসভা ভোটের আগের বছরে রাজ্যের আয় এতটা কমে গেলে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প ও সরকারি পরিষেবা ধাক্কা খাবে। মোদী সরকারের জিএসটি-র হারে রদবদল করে আমজনতাকে সুরাহা দেওয়ার প্রস্তাব মেনে নিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে। চলতি বছরে পশ্চিমবঙ্গ জিএসটি থেকে প্রায় ৪৯ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা আয়ের আশা করছে। কিন্তু এখন জিএসটি হার কমানো হলে রাজ্যের বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার লোকসান হবে বলেই আশঙ্কা।

রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সামনে প্রস্তাব রেখেছে কেন্দ্র, জিএসটি ব্যবস্থায় এখন থেকে মূলত দু’টি করের হার থাকবে— ৫% ও ১৮%। জিএসটি-র ১২% হার তুলে দেওয়া হবে। অধিকাংশ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে জিএসটি-র বোঝা ১২% থেকে কমে ৫% বা শূন্যে নেমে আসবে। মোদী সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে করের বোঝা কমিয়ে বাজারে কেনাকাটা বাড়াতে চাইছে। কিন্তু বিরোধী শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের আশঙ্কা, এর ফলে ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা থেকে ২ লক্ষ কোটি টাকার রাজস্ব লোকসান হবে।

এর মধ্যে শুধু পশ্চিমবঙ্গেরবছরে ১০ হাজার কোটি টাকার লোকসান হবে রাজ্য সরকারের আশঙ্কা। আজ দিল্লিতে আটটি বিরোধী শাসিত রাজ্য— কর্নাটক, হিমাচল প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, কেরল, পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা ও পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে রাজ্যের হয়ে দিল্লিতে নিযুক্ত রেসিডেন্ট কমিশনার উজ্জয়িনী দত্ত যোগ দেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের এই বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হলে সাধারণ মানুষের জন্য বিভিন্ন পরিষেবা ও জনমুখী প্রকল্পে ধাক্কা লাগবে। ফলে এই ক্ষতি পূরণের বন্দোবস্ত করতে হবে। তার জন্য হয় আগের মতো ক্ষতিপূরণ সেস চালু রাখতে হবে। অথবা জিএসটি-তে অতিরিক্ত লেভি বসাতে হবে।

গত সপ্তাহে দিল্লিতে জিএসটি হার কমানো নিয়ে মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা জিএসটি কমাতে কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে নিচ্ছেন। কিন্তু একই সঙ্গে রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। আগামী ৩ ও ৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের জিএসটি পরিষদের বৈঠক বসছে। সেখানে রাজ্যের এই উদ্বেগের কথা জানানো হবে।

কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের অর্থমন্ত্রী কৃষ্ণ বায়র গৌড়া বলেছেন, ‘‘মানুষের স্বার্থে আমরা জিএসটি কমাতে রাজি। কিন্তু এর ফলে জিএসটি থেকে আয় ১৫-২০ শতাংশ কমে যাবে। রাজ্যগুলির কোষাগারে সঙ্কট তৈরি হবে।’’ তাঁর যুক্তি, জিএসটি কমলে কেন্দ্র ও রাজ্য, দু’তরফেরই ক্ষতি হবে। রাজ্যের ধাক্কা লাগবে বেশি। কেন্দ্রের নিজস্ব আয়ের মাত্র ২৮ শতাংশ আসে জিএসটি থেকে। কিন্তু রাজ্যগুলির আয়ের প্রায় অর্ধেক অর্থ জিএসটি থেকে আসে।

এই ক্ষতি কী ভাবে পূরণ হবে, তা নিয়ে কেন্দ্রের তরফ থেকে কোনও প্রস্তাব মেলেনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

GST West Bengal government Mamata Banerjee GST Rate

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy