E-Paper

কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, পঞ্চায়েত ভোটে অন্য কয়েকটি রাজ্য থেকে সশস্ত্র পুলিশ চাইছে নবান্ন

রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক রূপরেখায় সব বুথে সশস্ত্র বাহিনী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা এখনই নেই বলে কমিশনকে জানিয়েছেন শীর্ষ আমলারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৩ ০৬:৪৭
Police Force

—প্রতীকী ছবি।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব বিরোধীরা। এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে। শুক্রবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে সরব হয়েছেন কংগ্রেস, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতারা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যাপারে রাজ্য সরকার এখনও ততটা সম্মত না হলেও, অন্য কয়েকটি রাজ্যের কাছে থেকে ইতিমধ্যেই সশস্ত্র পুলিশ চেয়েছে নবান্ন।

প্রসঙ্গত, আজ, শনিবার থেকে পুলিশের ছুটি বাতিল করেছে রাজ্য সরকার। একমাত্র জরুরি কারণেই ছুটির আর্জি বিবেচনা করা হতে পারে।

এ দিনই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে পর্যাপ্ত বাহিনী নিশ্চিত করার পক্ষে সওয়াল করেছে কমিশন। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক রূপরেখায় সব বুথে সশস্ত্র বাহিনী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা এখনই নেই বলে কমিশনকে জানিয়েছেন শীর্ষ আমলারা। তাঁরা বলেছেন, প্রয়োজনে অন্য রাজ্য থেকে বাহিনী আনার প্রস্তুতি চালাচ্ছে সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের অনুমান, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্য থেকে বাহিনী চাইতে পারে নবান্ন। এক কর্তার বক্তব্য, “কোন কোন রাজ্য সম্মত হয়, তা আগে দেখতে হবে। রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের মূল শক্তির কত জনকে পঞ্চায়েত ভোটে ব্যবহার করা যাবে, সেই সমীক্ষা চলছে। আশা করা যায়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিষয়টা স্পষ্ট হবে।”

কমিশন সূত্রের খবর, জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের উপদ্রুত এলাকা বা স্পর্শকাতর বুথগুলি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা পুলিশবাহিনীকে সেই সব জায়গায় ব্যবহার করা যেতে পারে। অথবা সব বুথকে স্পর্শকাতর ধরে নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারে কমিশন। ইতিমধ্যেই অবশ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রচারের সময়ে বাইক-মিছিল নিষিদ্ধ করেছে। তার লিখিত বার্তা পাঠানো হয়েছে সব জেলাশাসককে।

এ দিন কমিশনের বৈঠকের পরে রাজ্যের মুখ্যসচিব বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা, রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে। অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ আনার ব্যাপারে সেই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে খবর। প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, রাজ্য পুলিশের সংখ্যা প্রায় ৭৮ হাজার। শীঘ্রই আরও আট হাজার যোগদান করতে পারেন বাহিনীতে। সময়ের মধ্যে তাঁরা যোগদান করলে তাঁদেরও ভোট-নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হতে পারে। কলকাতা পুলিশের সংখ্যা কমবেশি ৩০ হাজার।

কিন্তু মূল এবং অগজ়িলিয়ারি মিলিয়ে পঞ্চায়েতে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৬১,৬৩৬। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রতিটি বুথে দু’জন করে পুলিশ নিয়োগ করতে হলেও প্রায় ১.২৩ লক্ষ পুলিশকর্মীর প্রয়োজন। এ ছাড়াও সাধারণ আইনশৃঙ্খলা, তল্লাশি, ফ্লাইং স্কোয়াড, মোবাইল নিরাপত্তা ইত্যাদি ব্যবস্থাপনায় আরও পুলিশ দরকার হবে। স্ট্রং-রুম রক্ষার জন্যও অনেক সংখ্যায় পুলিশ প্রয়োজন। হোমগার্ডদের সাধারণত লাইন দেখাশোনার কাজে লাগানো হয়। সিভিক পুলিশকে ভোটে ব্যবহার করতে পারবে না রাজ্য। আবার সব থানা ফাঁকা করে পুলিশকে ভোটে লাগানোও সম্ভব নয়। কলকাতা পুলিশের থেকে চার-পাঁচ হাজার জনকে ভোটের কাজে ব্যবহার করা হলেও ঘাটতি মিটবে না। তাই বাইরের রাজ্য থেকে বাহিনী আনার ব্যাপারে এতটা তৎপর হতে হচ্ছে রাজ্যকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 Nabanna West Bengal State Election Commission

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy