যুযুধান: উত্তরকন্যায় বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
রাজ্যের চা বাগিচায় ন্যূনতম মজুরি চুক্তির দ্রুত রূপায়ণের দাবিতে যৌথ মঞ্চের ডাকা বনধকে তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার দুপুরে উত্তরবঙ্গের শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যায় এক প্রশাসনিক বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী ওই আবেদন জানান। এই আন্দোলন, বন্ধ ঘিরে বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে বলে কড়া ভাষায় অভিযোগ করেন তিনি। বিধানসভা ভোটের আগে বলা ৭টি বাগান কেন এখনও অধিগ্রহণ করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানান।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা বন্ধের বিরুদ্ধে। হাইকোর্টও বন্ধকে বেআইনি বলে দিয়েছে। তা ছাড়া শিল্পের ক্ষতি করে বন্ধ কেন। বারবার আলোচনা হতে পারে। কাজ বন্ধ থাকলে তো আখেরে চা শ্রমিকদেরই ক্ষতি। শ্রমমন্ত্রী বন্ধ না করার আবেদন করেছেন। আমিও তাই বলছি।’’
মজুরির চুক্তির দাবিতে আগামী সোম ও মঙ্গলবার সমস্ত চা বলয়ে ধমর্ঘট ডেকেছে ২৪টি শ্রমিক সংগঠনের যৌথমঞ্চ। মঙ্গলবার আবার চা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন করে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলায় এবং মেখলিগঞ্জ-ইসলামপুর মহকুমা সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। বড় ও মাঝারি মিলিয়ে ২৯৫টি বাগান রয়েছে। এ ছাড়া কয়েক হাজার ছোট বাগান রয়েছে।
দার্জিলিঙে মোর্চার বৈঠকে বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত এক বছর ধরেই ন্যূনতম মজুরি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক স্তরে আলোচনা চলছে। একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। মাঝে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করে ১৩২.৫০ টাকা করা হয়। যৌথমঞ্চের দাবি, সরকার শ্রমিকদের কথা ভাবছে না। কেবল অন্তর্বর্তী মজুরি বাড়িয়ে সময় কাটাতে চাইছে। এর প্রতিবাদেই বন্ধ ডেকেছেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের সরকারই ক্ষমতায় এসে মজুরি বাড়িয়েছে। কোনওদিন এত মজুরি বেড়েছিল না কি? আর আলোচনায় তো একটা কিছু হবে। সেখানে শ্রমিক আন্দোলনের কথা বলে হচ্ছে। এটা শ্রমিক আন্দোলন নয়, কর্মদিবস নষ্ট। আমরা এ সব চাই না।’’
দলীয় সূত্রের খবর, নিজেদের চা শ্রমিক সংগঠনকে ধর্মঘটের বিরুদ্ধে প্রচারের নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল। তেমনিই, দু’দিনই তৃণমূলের শ্রমিকরা বাগানে কাজে যাবেন। প্রয়োজনে চা শ্রমিক নেতাদের বিভিন্ন বাগানে ঘুরতেও বলা হয়েছে। যৌথ মঞ্চের তরফেও তরাই ডুয়ার্সে ধমর্ঘটের সমর্থনে প্রচার শুরু হয়েছে। মঞ্চের আহ্বায়ক জিয়াউল আলম বলেন, ‘‘আমরা সিদ্ধান্তে অনড়। সরকার যা করছে, তা আদতে শ্রমিক বিরোধী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy