Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Rain fall

Weather Forecast: বর্ষণে দুর্ভোগ, আজ স্বস্তির ইঙ্গিত

আলিপুরে বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার। দফায় দফায় ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন বহু এলাকা। ব্যাহত হয়েছে যানবাহনের স্বাভাবিক গতিও।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:২৫
Share: Save:

নিজে সটান হাজির হয়নি ঠিকই। কিন্তু রীতিমতো ‘প্রভাবশালী’র ভূমিকা নিয়েছে গভীর নিম্নচাপ। এবং এমনই সক্রিয় তার প্রভাব যে, মৌসুমি অক্ষরেখা একেবারে কলকাতার মাথার উপরে এসে থিতু হয়ে গিয়েছে। দোসর হয়েছে সেই গভীর নিম্নচাপেরই প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প। তাদের যুগলবন্দিতেই মঙ্গলবার সকাল থেকে কলকাতা এবং লাগোয়া দক্ষিণবঙ্গে একটানা বৃষ্টি চলছে বলে জানাচ্ছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীরা।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি এমন জোরালো বর্ষণে অনেকেই একটু বিস্মিত। এমন বৃষ্টি আর কত দিন চলবে, তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা, জল্পনা। আজ, বুধবার দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানান আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস।

আলিপুরে বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার। দফায় দফায় ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন বহু এলাকা। ব্যাহত হয়েছে যানবাহনের স্বাভাবিক গতিও। দু’-তিনটি বিমান বৃষ্টির দরুন দু’বারের চেষ্টায় নামতে পেরেছে কলকাতা বিনামবন্দরে। টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু এলাকা। আনাজের জমিতে জল জমে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিকেল পর্যন্ত দমদমে ১৩০, সল্টলেকে ১০৪, ব্যারাকপুরে ৯৮, ডায়মন্ড হারবারে ১১৫, কাঁথিতে ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে এমন বৃষ্টি বিরল নয়। হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, গত এক দশকে বহু বারই কলকাতায় এক দিনে এমন ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ১৯৭৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এক দিনে কলকাতায় ৩৬৯.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। বানভাসি হয়ে গিয়েছিল শহর।

গত সপ্তাহের শেষে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ জন্ম নিয়েছিল। ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে সোমবার সেটি গভীর নিম্নচাপ হিসেবে ওড়িশা দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকেছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সেটি মধ্য ভারতের দিকে সরে গিয়েছে। মৌসম ভবনের খবর, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ওড়িশার অনেক এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে।

গভীর নিম্নচাপটি ওড়িশা হয়ে মধ্যপ্রদেশের দিকে সরে যাওয়ায় গাঙ্গেয় বঙ্গে তেমন জোরালো বৃষ্টি হবে না বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু সেই অনুমানকে কার্যত ভুল প্রমাণ করে এ দিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয় কলকাতায়। এর কারণ হিসেবে হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশবাবু জানান, মৌসুমি অক্ষরেখা কলকাতার উপরে থিতু হয়েছে। তার টানে জলীয় বাষ্প এসে তৈরি করেছে ভারী মেঘ। রেডার-চিত্র দেখে আবহবিজ্ঞানীদের বক্তব্য, বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরের হাওয়া ওই মেঘকে ঠেলে সরাতে পারেনি। ফলে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ক্রমাগত বৃষ্টি ঝরিয়েছে সেই মেঘ।

টানা বৃষ্টির জেরে এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমার বেশ কয়েকটি জায়গায় মাটির বাঁধে ধস নেমেছে। নামখানা ব্লকের মৌসুনি দ্বীপে নারায়ণ পল্লি ও ইন্দ্র পল্লির কাছে বাঁধের অবস্থা বিপজ্জনক। দু’টি জায়গা দিয়ে মাঝেমধ্যে জলও ঢুকছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এ ভাবে বৃষ্টি চললে বাঁধ ভেঙে ফের ভাসতে পারে এলাকা। তা ছাড়া সামনেই ষাঁড়াষাঁড়ির কটাল।

হাওড়া ও হুগলি দুই জেলাতেই দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে হাওড়ার উলুবেড়িয়া, বাগনান, সাঁকরাইলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। একই ছবি হুগলির উত্তরপাড়া, চুঁচুড়া, চন্দননগরে। সোমবার থেকে টানা বৃষ্টিতে আরামবাগ শহরটাই কার্যত নর্দমার চেহারা নিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain fall Alipore Weather Office Weather Forecast
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE