E-Paper

পরীক্ষাকেন্দ্র থেকেই কি ‘ফাঁস’ টেট-প্রশ্ন

পর্ষদ কর্তাদের দাবি, পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের দু’টি ওএমআর শিট দেওয়া হয়েছিল। একটি গোলাপি, অন্যটি সবুজ। গোলাপি ওএমআর শিট পরীক্ষাকেন্দ্রে জমা দিয়ে সবুজটি সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:১৬
exam.

—প্রতীকী ছবি।

সমাজমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়া টেট-প্রশ্নের ছবিতে উঁকি মেরেছে গোলাপি রঙের ওএমআর শিট। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কর্তাদের আপাতত ধারণা, পরীক্ষাকেন্দ্রে বসেই প্রশ্নের ছবি তুলে তা সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং তা হয়েছে উত্তরবঙ্গের কোনও জেলা থেকে।

পর্ষদ কর্তাদের দাবি, পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের দু’টি ওএমআর শিট দেওয়া হয়েছিল। একটি গোলাপি, অন্যটি সবুজ। গোলাপি ওএমআর শিট পরীক্ষাকেন্দ্রে জমা দিয়ে সবুজটি সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা। আর ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নের পিছনে গোলাপি রঙের ওএমআর শিট দেখা গিয়েছে।

টেট-পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তদন্তের নির্যাস এটুকুই।

পর্ষদ কর্তাদের দাবি, পরীক্ষা চলাকালীনই প্রশ্নপত্র সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে এবং তাতে পরীক্ষার্থীদের কেউ সুবিধা পায়নি। পরীক্ষা চলাকালীন বাইরে থেকে সেই প্রশ্নের উত্তর লিখে পরীক্ষার্থীদের কোনও ভাবেই জানানো সম্ভব ছিল না। তার মূল কারণ, পরীক্ষার্থীদের মোবাইল নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু মোবাইল নিয়ে যদি কেউ পরীক্ষাকেন্দ্রে না-ই ঢুকবেন, তা হলে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ছবি তুলে কেউ বাইরে পাঠাল কী করে? এত কড়াকড়ি কি শুধু মুখের কথাতেই সীমাবদ্ধ ছিল?

রাজ্য শিক্ষা দফতরের একাংশের যুক্তি, প্রত্যন্ত কোনও এলাকায়, যেখানে নিরাপত্তার খামতি ছিল, সেখানকার কোনও পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। যার অর্থ, সেখানে মোবাইল নিয়ে পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে ঢুকেছিলেন। শিক্ষামহলের যুক্তি, সে ক্ষেত্রে তো একাধিক পরীক্ষার্থীই মোবাইল নিয়ে ঢুকে থাকতে পারেন। ফাঁসহয়ে যাওয়া প্রশ্ন থেকে কোনও পরীক্ষার্থী কোনও সুবিধা পাননি বলে পর্ষদ যে যুক্তি দিচ্ছে, তাও খণ্ডন করে পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা মোবাইল নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকতে পেরেছিলেন, ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নের উত্তর তো তাঁদের কাছে অনায়াসে পৌঁছে দেওয়াসম্ভব ছিল।

সোমবার এ সবের সদুত্তর পর্ষদের কর্তারা দিতে পারেননি। পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘আমাদের কাছে অনেক তথ্যপ্রমাণ এসেছে। বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে, কারা এই ঘটনায় জড়িত।’’

সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দুপুর ১টার আশপাশে ফেসবুক পেজে ওই প্রশ্ন প্রথম আপলোড হয়েছিল। সেটি পরীক্ষার্থীদেরই একটি ফেসবুক পেজ। সেটি কারা চালান, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে কারা জড়িত ছিলেন, তার খোঁজ করা হচ্ছে।

সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত জানান, সমাজমাধ্যমে ছড়ানো প্রশ্নের পাতাগুলি ভাল করে খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, কোন মডেলের মোবাইল থেকে এই ছবি তোলা হয়েছে। কারণ প্রতিটি ছবিতে মোবাইলের মডেল নম্বর দেওয়া আছে। ছবির নীচে লেখা ‘ডি ফটোগ্রাফি’। সন্দীপের কথায়, ‘‘অনেক সময় মোবাইলেরমালিকের নামের জলছাপও ছবিতে থাকে। পোস্ট করার আগে সেটাক্রপ না-করলে সেই ভাবেই থেকে যায়। এখানে যে ‘ডি ফটোগ্রাফি’ লেখা রয়েছে,তা কারও নাম নাকিকোনও সংস্থার নাম সেটা খতিয়ে দেখলে জানা সম্ভব। সেখান থেকেই কোন এলাকা থেকে এই ছবি তোলা হয়েছে তা-ও অনেকটা পরিষ্কারহয়ে যাবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TET Examinations West Bengal Social Media

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy