Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
State News

ড্রাগ খেয়ে আন্দোলন, তার ফলে রবীন্দ্রভারতী-কাণ্ড, বললেন দিলীপ

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অশ্লীল শব্দ লিখে ছাত্রীদের পৃষ্ঠ প্রদর্শন নিয়ে শুক্রবার থেকে তোলপাড় চলছে রাজ্যের নানা মহলে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০১:২৭
Share: Save:

আন্তর্জাতিক নারী দিবসেও মহিলাদের সম্পর্কে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য থেকে বিরত থাকলেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অশ্লীল শব্দ লিখে ছাত্রীদের পৃষ্ঠ প্রদর্শন নিয়ে শুক্রবার থেকে তোলপাড় চলছে রাজ্যের নানা মহলে। ওই কাণ্ড নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রবিবার দিলীপবাবু বলেন, ‘‘বাচ্চা বাচ্চা মেয়েরা এই ধরনের অশালীন ব্যবহার করছে এবং সেটা প্রচার করছে, এটা অত্যন্ত চিন্তার এবং দুর্ভাগ্যজনক। কিছু দিন ধরে এই ধরনের যে বিধ্বংসী আন্দোলন চলছে, মেয়েদের যে ভাবে ড্রাগ খাইয়ে সামনে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তারা সারা দিন ধরে চিৎকার করছে, তারই পরিণাম হচ্ছে এ সব। মেয়েরা সংস্কার, সংস্কৃতি, নিজের ভাল-মন্দ, মান সম্মানের কথাও ভুলে গেছে। এই মেয়েগুলি যদি রাস্তায় এমন করে, এদের সঙ্গে লোকেরা কী ব্যবহার করবে? এরা তো হিংসার শিকার হয়ে যাবে!’’

একই সঙ্গে দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। এই ঘটনা আমাদের সমাজের অবক্ষয়ের প্রকাশ। ওই ছেলেমেয়েদের অভিভাবক, কলেজ কর্তৃপক্ষ, স্কুল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষামন্ত্রী, আমাদের সকলের দায়িত্ব আছে।’’

আরও পড়ুন: হুঁশিয়ারি সার, মাস্ক নিয়ে দেদার কালোবাজারি ঠেকাতে পারছে না পুলিশি নজরদারি

দিলীপবাবুর মুখে ‘কুকথা’ এবং মেয়েদের সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য অবশ্য নতুন নয়। প্রায়ই তিনি এমন কথা বলে থাকেন। এর আগে একাধিক বার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সম্পর্কে তাঁর কুৎসিত মন্তব্য নিয়ে নিন্দা হয়েছে। এমনকি, বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও বিভিন্ন সময় দিলীপবাবুকে ‘কুকথা’য় লাগাম পরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু কোনও কিছুতেই যে দিলীপবাবু তাঁর পুরনো অবস্থান থেকে সরছেন না, তা এ দিনের মন্তব্যে ফের স্পষ্ট।

দিলীপবাবুর ওই মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিন্দায় সরব হয়েছে তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস শিবির। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ অসভ্য, বর্বর! ইনি সভ্য সমাজে থাকতে পারেন না। যে ভাবে উনি মেয়েদের ড্রাগ খাওয়ার কথা বললেন, তাতে উনিই ড্রাগ খেয়ে আছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে! এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। এক জন উন্মাদ একটা দলের সভাপতি হয়ে মেয়েদের অপমান করছেন! নারী দিবসে মেয়েদের ড্রাগ খাওয়ার কথা বলছেন! এটা অন্যায়।’’

বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের অসভ্যের মতো মন্তব্যের প্রতি বার প্রতিক্রিয়া দেওয়া কোনও সভ্য মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। নেশাতুর লোকজন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় যে ভাবে কথা বলেন, রাজনীতিকদের সুর তেমন হলে আর কিছু বলার থাকে না!’’ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতি সম্পর্কে দিলীপবাবুদের কোনও ধারণাই নেই। ওঁরা যত এ ধরনের মন্তব্য করছেন, ততই বাংলার মানুষ তাঁদের স্বরূপ চিনতে পারছেন।’’

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া জানার পরে দিলীপবাবু ব্যাখ্যা দেন, ‘‘আমি বলেছি, জেএনইউ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়— এ সব জায়গায় ছেলেমেয়েরা ড্রাগ খেয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। কমিউনিস্টরা সেখানে সংগ্রামের নামে তাদের বিপথে পরিচালিত করে। সেখান থেকেই অপসংস্কৃতি শুরু হয় এবং অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dilip Ghosh BJP RBU Rabindra Bharati University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE