Advertisement
০৪ মে ২০২৪

দল ভাঙাতে বিশেষ সেল খুলছে বিজেপি

অন্য দল থেকে লোক ভাঙিয়ে আনার জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে কমিটি গঠন করা রাজনীতিতে কার্যত নজিরবিহীন। দল ভাঙাভাঙি হয় গোপন ব্যবস্থাপনায় অথবা প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০৩:০১
Share: Save:

দল ভাঙানোর সেল খুলেছে রাজ্য বিজেপি। তৃণমূল-সহ অন্যান্য দল থেকে কাদের বিজেপি-তে আনা যায়, তা খতিয়ে দেখবে ওই সেল। এর শীর্ষে রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় সেলের অন্যতম সদস্য। আর আছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সুভাষ সরকার, অজয় অগ্নিহোত্রী এবং শিশির বাজোরিয়া। ইতিমধ্যেই ওই সেলের একটি বৈঠকও হয়ে গিয়েছে। বিজেপি সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত নারদ কেলেঙ্কারিতে জড়িত তৃণমূলের একাধিক জনপ্রতিনিধি দল বদলে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

অন্য দল থেকে লোক ভাঙিয়ে আনার জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে কমিটি গঠন করা রাজনীতিতে কার্যত নজিরবিহীন। দল ভাঙাভাঙি হয় গোপন ব্যবস্থাপনায় অথবা প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। বিজেপি তার জন্য সেল গড়ল কেন? দলের ব্যাখ্যা, সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ রাজ্য নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, অন্য দল থেকে নেতা এবং জনপ্রতিনিধি নিয়ে নিজেদের দল বাড়াতে হবে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘অন্য দল থেকে নেতা এবং জনপ্রতিনিধি নিতে কয়েক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অনেকে আমার সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। অনেকে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা বলছেন। কারা শেষ পর্যন্ত বিজেপি-তে আসবেন, তা স্পষ্ট হবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পরেই।’’

যাঁদের নিয়ে বিজেপি এই কমিটি গড়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক সময়ের সিপিএমের অন্দরমহলের ঘনিষ্ঠ শিশিরবাবু, ফ ব-র যুব সংগঠনের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি অজয়বাবু। বিজেপি-র একাংশের মতে, সিপিএম এবং ফ ব-র বহু নেতা এবং জনপ্রিতিনিধির অভিযোগ, বাম শিবিরে থেকে তৃণমূলের মোকাবিলা করা যাচ্ছে না। ফলে তাঁরা গেরুয়া শিবিরে যেতে চাইছেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘এটা নতুন কিছু নয়। তৃণমূল যে দল ভাঙানোর খেলায় হাত পাকিয়েছে, সেটাই বিজেপি-ও করছে। তাদের ঝগড়া যে বাইরে দেখানো, আসলে যে তারা হরিহর আত্মা, সেটা ফের প্রমাণিত হচ্ছে।’’

কিন্তু তৃণমূল ভাঙানো এখন কতটা সহজ হবে, সে ব্যাপারে বিজেপি সংশয়ী। মুখে না বললেও তাদের বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট। দলের এক নেতা ঘুরিয়ে বলেন, ‘‘নারদ কেলেঙ্কারিতে জড়িত কাউকে নেওয়া আমাদের পক্ষে আত্মঘাতী পদক্ষেপ হতে পারে। কারণ, নারদ-কাণ্ডের প্রতিবাদে আমরাই হইচই বাধিয়েছিলাম। তাই অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।’’ তবে তাঁর দাবি, তৃণমূলের যাঁদের ভাবমূর্তিতে কালি লাগেনি, তাঁদেরও নিশানা করছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কত বড় দেউলিয়া দল যে, তৃণমূলকে ভাঙাতে সেল গড়তে হচ্ছে! বিজেপি-র মতাদর্শের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের চিন্তা মেলে না। তাই ধান্দাবাজ ছাড়া কে আর ওই দলে যাবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE