মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যপালকে সরিয়ে রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চায় রাজ্যের মন্ত্রিসভা। এই মর্মে এর আগে যে প্রস্তাব উঠেছিল, সোমবার তাতে মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্য, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রাণী এবং মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবেও মুখ্যমন্ত্রীর নাম অনুমোদন পেয়েছে মন্ত্রিসভার। আরও একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে মন্ত্রিসভায়। সেটি হল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক পদে থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী।
বর্তমানে রাজ্যপালই রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। কিন্তু সম্প্রতি সেই পুরনো নিয়ম বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার প্রস্তাব সুপারিশ করেছিল মন্ত্রিসভার একটি কমিটি। তবে সোমবার মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলেও বিষয়টি আইনে পরিণত হতে এখনও অনেকটা সময় লাগবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান। কেন না মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়ে প্রথমে এই প্রস্তাব বিধানসভায় পাশ করাতেহবে। বিধানসভায় পাশ হলে সেই বিল সই করানোর জন্য যাবে রাজ্যপালের কাছেই। অর্থাৎ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে তাঁকে সরানোর আইনে অনুমতি নিতে হবে স্বয়ং রাজ্যপালেরই। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সেখানেই আটকে যাওয়ার ঘোরতর সম্ভাবনা রয়েছে বিলটির।
রাজ্যপাল সই না করে বিলটি আটকে রাখতে পারেন। তখন রাজ্য অর্ডিন্যান্স জারি করে জরুরি ভিত্তিতে বিলটি কার্যকর করতে পারে। তবে তা ছ’মাসের জন্যই কার্যকর থাকে। শিক্ষা যেহেতু যুগ্ম তালিকাভুক্ত, তাই রাজ্যপাল বিলটি দু’বার ফিরিয়ে দিলে তা যেতে পারে রাষ্ট্রপতির কাছে। তবে এ সবই সময়সাপেক্ষ।
রাজ্যের আরও বেশ কিছু বিষয়ের মতো শিক্ষাক্ষেত্রেও নানা অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল। যার ফলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ক্রমাবনতি হয়েছে। এমনও লক্ষ করা গিয়েছে যে, রাজ্যপাল কখনও উপাচার্যদের বৈঠকে ডেকেছেন এবং উপাচার্যরা অনুপস্থিত থেকেছেন। কখনও উপাচার্য নিয়োগের প্রশ্নে আপত্তি তুলেছেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন তিনি। রাজ্যপালের অভিযোগ, এ পর্যন্ত তাঁর ডাকা কোনও বৈঠকেই উপাচার্যরা হাজির হননি রাজ্যের আপত্তিতেই।
সম্প্রতি রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সম্মতি ছাড়া ‘বেআইনিভাবে’ উপাচার্য নিয়োগ করেছে রাজ্য। এ নিয়েও রাজ্য-রাজ্যপাল দ্বন্দ্ব বাড়তি মাত্রা পায়। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সম্প্রতি প্রস্তাব দেন, রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করা হোক। অতঃপর, একটি কমিটি প্রস্তাব করে রাজ্যপাল নন, আচার্য হিসাবে আনা হোক মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই প্রস্তাবই পাশ হল মন্ত্রিসভায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy