Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বস্তা পিছু স্রেফ ১ টাকা, চটেছে রাজ্য

ধান কেনার শিবিরগুলিতে কাজ করা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণের অভিযোগ তুলল রাজ্য সরকার। তাদের দাবি, অন্য অনেক রাজ্যে ওই মজুরি বেশি হওয়ায় সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তা যৎসামান্য।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:১৮
Share: Save:

ধান কেনার শিবিরগুলিতে কাজ করা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণের অভিযোগ তুলল রাজ্য সরকার। তাদের দাবি, অন্য অনেক রাজ্যে ওই মজুরি বেশি হওয়ায় সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তা যৎসামান্য। এর প্রতিবাদে আজ, শনিবার রাজ্য সরকারের এক প্রতিনিধি দল দিল্লি যাবে।

১ নভেম্বর থেকে রাজ্যের ৩৫৬টি জায়গায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনার শিবির শুরু হয়ে গিয়েছে। ধান ভাঙানোর জন্য চালকলগুলির সঙ্গেও চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে রাজ্য সরকার। শিবিরে ধান নামানো থেকে চালকলের চাল গুদামজাত করা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের পারিশ্রমিকই চলতি বছরে কেন্দ্রীয় সরকার কুইন্টাল প্রতি ৮ টাকা কমিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ রাজ্যের চালকলগুলির সংগঠন ‘বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশন’-এর। মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে এ রাজ্যের সঙ্গে বঞ্চনা করা হয়েছে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ই-মেল করেছেন ওই সংগঠনের সভাপতি সুশীলকুমার চৌধুরী। শুক্রবার তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি খাদ্যমন্ত্রীকেও জানিয়েছি। গত তিন বছর ধরেই কেন্দ্র মান্ডি-শ্রমিকদের টাকা কমাচ্ছে।”

ওই সংগঠনের দাবি, ২০১৫ সালে এ রাজ্যের মান্ডি-শ্রমিকদের কেন্দ্র কুইন্টাল প্রতি ৭ টাকা ৫ পয়সা করে মজুরি দিয়েছিল। ২০১৬ সালে সেটা কমে দাঁড়ায় ৪ টাকা ৫৩ পয়সায়। কিন্তু, রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে ওই শ্রমিকদের জন্য কুইন্টাল প্রতি বরাদ্দ করা হয় ১০ টাকা ৩৩ পয়সা। অথচ এ বছর সেটাই এক ধাক্কায় কমিয়ে করা হয়েছে ২ টাকা ৭৩ পয়সা। চালকলগুলির শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি আব্দুল মালেকের দাবি, “পঞ্জাবের মান্ডি শ্রমিকদের জন্য ২৯.৪৭ টাকা, হরিয়ানার জন্য ১৭.৬৮ টাকা বরাদ্দ করেছে। এমনকী, ওডিশাতেও শ্রমিক পাচ্ছেন কুইন্টাল পিছু ১২.১৯ টাকা। সেখানে আমাদের রাজ্যের জন্য মাত্র ২.৭৩ টাকা! এতে বস্তা (৫০ কেজি) পিছু স্রেফ ১ টাকা ৩৬ পয়সা মজুরি দাঁড়াচ্ছে। ওই টাকায় শ্রমিকেরা কাজ করবেন না। করতে পারবেনও না।” তিনি জানান, এ রাজ্যে প্রায় ১৪০০ চালকল রয়েছে। সেগুলির মধ্যে প্রতি বছরই ৮৫ শতাংশ চালকল সহায়ক মূল্যের শিবির থেকে চাল নিয়ে ভাঙায়। এই কাজে রাজ্যে দুই থেকে আড়াই লক্ষ শ্রমিক কাজ করেন। তাঁরা কাজ না করলে সহায়ক শিবির থেকে সরকারের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা মার খাবে। তাই তাঁরা রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

এ বছর রাজ্যের চাল সংগ্রহ করবে ৫২ লক্ষ মেট্রিক টন। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে চটেছে রাজ্যও। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র নোংরামি করছে। আমাদের হেনস্থা করতে চাইছে। রাজনীতি নিজের জায়গায়। কিন্তু, বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে গরিব শ্রমিকেরাই অসুবিধার মুখে পড়ছেন।’’ তিনি জানান, মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শনিবার সরকারের এক প্রতিনিধিদল কৃষি মন্ত্রকে গিয়ে মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানাবে। সমস্যা না মিটলে ফের আলোচনায় বসা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

State Government Central Government Sack Paddy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE