Advertisement
E-Paper

এ বছর রাজ্যে পাশ-ফেল ফিরবে কি না সংশয়

সংসদের উভয় কক্ষেই সংশোধনী বিলটি পাশ হওয়ায় পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষার পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার অধিকার পেয়েছে সব রাজ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৭
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে স্কুল স্তরে পাশ-ফেল প্রথা ফিরছে। সংসদের উভয় কক্ষেই সংশোধনী বিলটি পাশ হওয়ায় পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষার পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার অধিকার পেয়েছে সব রাজ্য। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে পশ্চিমবঙ্গে আদৌ পাশ-ফেল ফেরানো যাবে কি না, সেই প্রশ্নটা বড় হয়ে উঠছে।

সংশয়ের অন্যতম কারণ হল, রাজ্যের স্কুলে স্কুলে ইতিমধ্যেই নতুন সেশন চালু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চলতি শিক্ষাবর্ষে পাশ-ফেল প্রথা কী ভাবে চালু করা যাবে, সেটাই ভাবিয়ে তুলেছে স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের। সেই সঙ্গেই উঠে এসেছে আরও বেশ কিছু প্রশ্ন।

বৃহস্পতিবার বিল পাশের সময় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর রাজ্যসভায় স্পষ্ট করে দেন, পরীক্ষায় ফেল করিয়ে কাউকে আটকে দেওয়া এই বিলের উদ্দেশ্য নয়। তাই পঞ্চম বা অষ্টম শ্রেণিতে কেউ ফেল করলে দু’মাস পরে সেই পড়ুয়াকে ফের পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করে দিতে হবে স্কুলকে। তাতেও পড়ুয়া যদি ব্যর্থ হয়, তাকে একই শ্রেণিতে রেখে দেওয়া হবে কি না, সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্কুল তথা সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে: অকৃতকার্য পড়ুয়াদের দু’মাস পরে ‘রেমিডিয়াল টেস্ট’-এর ব্যবস্থা হলে সেই পরীক্ষা কী ভাবে নেওয়া হবে? যে-সব পড়ুয়া ওই টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে নতুন ক্লাসে যাবে, তাদের পঠনপাঠন শুরু করতে তো দেরি হবে। সে-ক্ষেত্রে তাদের জন্য বিশেষ কোনও ব্যবস্থা করা হবে কি? অকৃতকার্য হলে রেমিডিয়াল টেস্টের আগের দু’মাস সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া কি স্কুলে যেতে পারে? যদি স্কুলে যায়, তারা কোন ক্লাসে বসবে? রেমিডিয়াল টেস্টে অকৃতকার্য হলে ক্লাসে পড়ুয়ার সংখ্যাও বাড়বে। তাতে পড়ুয়া-শিক্ষক অনুপাতে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা আছে। এর ফলে স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারেই জানিয়েছিলেন, পাশ-ফেল ফেরানোর ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

পাশ–ফেল ফেরানোর বিষয়ে এই রাজ্যে শিক্ষা শিবির এবং রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে মতভেদ দীর্ঘদিনের। এসইউসি বরাবরই প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল প্রথা চালু করার দাবি জানিয়ে আসছে। আন্দোলনও করছে। এ দিন এসইউসি-র সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ জানান, প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল চালু করার দাবিতে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। অন্য দিকে, বাম শিক্ষক সমিতি এবিটিএ এবং বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি পাশ-ফেল প্রথা ফেরানোর বিরোধী। এবিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘ধারাবাহিক মূল্যায়ন পড়ুয়াদের পক্ষে আদর্শ। সেখানে ফেল করানোর কোনও জায়গাই নেই।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, সারা পৃথিবীতে স্কুল স্তরে পাশ-ফেল প্রথা তুলে দেওয়া হচ্ছে। অথচ এ দেশে সেটা ফিরিয়ে আনা হল! এই সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়।

Education Pass Fail Partha Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy