Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩

রাজ-স্বরাজ থিমে পার্ক ব্যারাকপুরে

মূল থিম ‘রাজ থেকে স্বরাজ’। উৎসধারায় তিন ভাগে ভাগ করা হবে সেটিকে। প্রথমে ‘রাজ-সময়’। অর্থাৎ বাংলার রাজারাজড়াদের আমল থেকে ব্রিটিশ আসার আগে পর্যন্ত সময়কে ধরার চেষ্টা হবে এই ভাগে।

অত্রি মিত্র
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:১৯
Share: Save:

নিউ টাউনে তৈরি হয়েছে প্রকৃতিতীর্থ। সেই ধাঁচেই ব্যারাকপুরের লাটবাগান সংলগ্ন গঙ্গাপাড় বরাবর এ বার গড়ে উঠবে থিম পার্ক ‘উৎসধারা’।

Advertisement

মূল থিম ‘রাজ থেকে স্বরাজ’। উৎসধারায় তিন ভাগে ভাগ করা হবে সেটিকে। প্রথমে ‘রাজ-সময়’। অর্থাৎ বাংলার রাজারাজড়াদের আমল থেকে ব্রিটিশ আসার আগে পর্যন্ত সময়কে ধরার চেষ্টা হবে এই ভাগে। তার পরে ‘সিপাহি বিদ্রোহ’। একেবারে শেষে থাকবে মোহনদাস গাঁধীর ‘অহিংস আন্দোলন’। বাংলার ইতিহাসের এই তিন সময়পর্বকে ধরেই সেজে উঠবে ব্যারাকপুরের উৎসধারা।

নিউ টাউনের ইকো পার্কের ধাঁচে গঙ্গাপাড়ের সাড়ে তিন কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় প্রস্তাবিত পার্ককে এমনই তিনটি ‘থিম’-এ ভাগ করার পরিকল্পনা করেছে নবান্ন। স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য-সহ নবান্নের কয়েক জন উচ্চপদস্থ কর্তা সম্প্রতি ওই এলাকা ঘুরে দেখেন। ফিরে এসে তাঁরা একটি রিপোর্ট দিয়েছেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই উৎসধারার এই পরিকল্পনা করেছে মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বাধীন কমিটি।

ঠিক হয়েছে, গঙ্গাপাড়ে প্রস্তাবিত থিম পার্কটি জওহর কুঞ্জ থেকে বিস্তৃত হবে অন্নপূর্ণা মন্দির পর্যন্ত। তার মধ্যে ঐতিহাসিক সৌধ-ঘেরা ফ্ল্যাগস্টাফ হাউস, ভাইস-রিগ্যাল হাউস, মিন্টো ফাউন্টেন এবং লেডি ক্যানিংয়ের সমাধির এলাকা পড়বে ‘রাজ-সময়’ বিভাগে। তার পরে সিপাহি বিদ্রোহের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক বটগাছকে ঘিরে তৈরি হবে ‘সিপাহি বিদ্রোহ’-এর থিম এলাকা। গাঁধীর ‘অহিংস আন্দোলন’ থিমে ঠাঁই পাবে গাঁধীঘাট এলাকার চার পাশ। থাকবে বিশেষ মেডিটেশন সেন্টার। জওহর কুঞ্জে গাঁধীর দর্শন নিয়ে একটি সংগ্রহশালা তৈরিরও ভাবনা রয়েছে নবান্নের।

Advertisement

প্রাথমিক পরিকল্পনায় ঠিক হয়েছে, নিউ টাউন অ্যাকশন এরিয়া টু-তে তৈরি প্রকৃতিতীর্থের ধাঁচে ‘উৎসধারা’-তেও সে-ভাবে কোনও ভবন তৈরি করা হবে না। মূলত গাছপালা ঘেরা বাগান তৈরির উপরেই জোর দেওয়া হবে। সংরক্ষণ করা হবে সঙ্গে ‘ওয়াটার বডি’-ও। এ ছাড়া মঙ্গল পাণ্ডে গার্ডেনে ‘রাজ থেকে স্বরাজ’ থিমে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’-এরও ব্যবস্থা থাকবে।

গঙ্গাপাড় দিয়ে দর্শকদের হেঁটে বেড়ানোর টানা জায়গা রাখার কথাই ভাবছে নবান্ন। মধ্যে মধ্যে থাকবে বিভিন্ন থিমের পার্ক। গঙ্গাপাড়ে ঘোরার ফাঁকে ফাঁকে পর্যটক এবং দর্শকেরা ঘুরে ঘুরে খুঁটিয়ে দেখে ওই সব থিমের বিষয়বস্তু এবং নানা ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে একাত্ম হতে পারবেন। থাকবে শহিদ স্মারক জ্যোতিও। সেখানে শহিদদের স্মৃতিতে জ্বলবে আগুনের শিখা।

পুরো পার্কটি তৈরির নোডাল দফতরের দায়িত্ব পেতে চলেছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। যার মাথার উপরে থাকবে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে তৈরি সচিবদের কমিটি। ‘রাজ থেকে স্বরাজ’ এই থিমে উৎসধারার কাঠামো কী হবে, কোন অংশ কী ভাবে সাজানো যেতে পারে— তা ঠিক করতে শীঘ্রই একটি প্রতিযোগিতার আয়োদন করবে পূর্ত দফতর। সেখানে বিভিন্ন স্থপতির নকশা দেখে শেষ পর্যন্ত কাকে ওই পার্কের নকশা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া যায়, সেটা চূড়ান্ত করা হবে। কাকে পার্ক তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তার পরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.