উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের খবর, ২০২৩ সালে প্রায় ১০ লক্ষ পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিক দিতে পারে। ফাইল চিত্র।
ফের রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্টে ট্যাব কিংবা স্মার্ট ফোন কেনার টাকা পাঠাতে চলেছে সরকার। প্রশাসনের খবর, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অনুষ্ঠানে বাছাই করা কয়েক জন পড়ুয়ার হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেবেন। তার পরেই মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতে শুরু করবে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী কৃষ্ণনগরের একটি সভাতেও এ বছরের পড়ুয়াদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
অতিমারি পেরিয়ে স্কুলে স্কুলে অফলাইন পড়াশোনা হচ্ছে। রাজ্যের কোষাগারের অবস্থাও ভাল না। কয়েক মাস পরেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এই অবস্থায় দ্বাদশের পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা বিলির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, টাকা বিলিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন কি সরকারের উদ্দেশ্য? শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য বলছেন, ‘‘ট্যাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনলাইন, অফলাইন ক্লাস বিবেচনা করে করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে এই ট্যাব দেওয়াটা মেধাবি ছাত্রদের জন্য স্বীকৃতি প্রদান। তরুণদের স্বপ্ন প্রকল্প গরিব অনগ্রসর পড়ুয়াদের কথা ভেবেই করা হয়েছে।’’ প্রশ্ন ওঠে, রাজ্যের ১০০ শতাংশ পড়ুয়াকেই কি মেধাবির স্বীকৃতি দিচ্ছে সরকার? ১০০ শতাংশই কি গরিব, অনগ্রসর পড়ুয়া?
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের খবর, ২০২৩ সালে প্রায় ১০ লক্ষ পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিক দিতে পারে। কারণ, ২০২১ সালে অতিমারির জন্য মাধ্যমিকে ১০০ শতাংশ পরীক্ষার্থকেই পাশ করানো হয়েছিল। তাই খরচের বহরও অন্য বারের বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘যেখানে সরকার আর্থিক ভাবে ধুঁকছে সেখানে এই অপচয় কেন?’’ তাঁর মতে, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক আগে এই নতুন ট্যাব পেয়ে ওদের মন বিক্ষিপ্ত হতে পারে।’’
কোনও কোনও শিক্ষক বলছেন, ট্যাব বা কম্পিউটার উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জরুরি ঠিকই। সে ক্ষেত্রে সবাইকে না-দিয়ে শুধু আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের দেওয়া যেতে পারত। অফলাইনে স্মার্ট ফোন বা ট্যাব কী প্রয়োজন সেই প্রশ্ন উঠেছে।
বিধাননগর এলাকার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে প্রায় ৭০% শতাংশ পড়ুয়ার বাড়িতে একাধিক স্মার্ট ফোন রয়েছে। বাড়ির সেই ফোন দিয়েই পড়ুয়ারা কাজ চলায়। ওদের নতুন করে ফোনের দরকার নেই। বরং অভিভাবকদের স্মার্ট ফোন পড়ুয়ারা ব্যবহার করলে সেই ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত থাকে। নিজস্ব ট্যাব পেলে তা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা অনলাইন গেমের আসক্তি তৈরি হতে পারে।’’ ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের মতে, ‘‘ব্যক্তিগত ট্যাবের বদলে যদি স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য টাকা ব্যয় করলে তার উপযোগিতা বেশি। যেমন, ট্যাবের বদলে স্কুলে কম্পিউটার দিলে তা সব পড়ুয়ার কাজে লাগবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy