সিভি আনন্দ বোস। — ফাইল চিত্র।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ‘কাজ’ শুরু করে দিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ‘দুর্নীতি দমন (অ্যান্টি করাপশন) সেল’-এর ‘কন্ট্রোল রুম’। রাজভবনে চালু করা ওই সেলের হেল্প লাইনে রাজ্যের কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে বলে শুক্রবার সকালে তাঁর ‘আমনে সামনে’ কর্মসূচিতে জানিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অনুমোদন পুনর্নবীকরণ সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
বোসের এই ঘোষণা ঘিরে নতুন করে রাজভবন এবং রাজ্য সরকারের সংঘাত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাজভবনে ‘অ্যান্টি করাপশন সেল’ গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন বোস। তিনি জানান, সরাসরি এ বার রাজভবনেই দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে। তার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রাজ্যপালের কথায়, ‘‘কেউ টাকা চাইলে তার ছবি নিন। আমাকে পাঠিয়ে দিন। মুখ্যমন্ত্রী এই কথাই কোচবিহারে বলেছিলেন। আমি তা চালু করতে চাই। কেউ দুর্নীতি করলে জানান। আমরা তা উপযুক্ত জায়গায় পৌঁছে দেব।’’ শুক্রবার বোস বলেন, ‘‘আর্থিক অনিয়মের পাশাপাশি কিছু বেসরকারি কলেজের বাণিজ্যিক আচরণের ফলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। তাই এই পদক্ষেপ।’’
এর পরেই রাজ্যপালের ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ মন্তব্য ছিল, ‘‘রাজভবন লক্ষ্মণরেখার মধ্যে থেকে কাজ করছে।’’ রাজ্যপালের ওই ঘোষণার কিছু ক্ষণ পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে কার্যত ‘রাজভবনের এক্তিয়ার’ নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল মহাশয় নাকি দুর্নীতির ব্যাপারে স্পেশাল সেল করছেন। এটা কিন্তু রাজভবনের কাজ নয়। রাজ্যপালকে আমরা শ্রদ্ধা করি। যেটা রাজ্য সরকারের অধিকার, সেই অধিকারে উনি কোনও প্রয়োজন ছাড়াই হস্তক্ষেপ করছেন।’’
রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে আসার পরে বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক ভালই ছিল। তবে পরে রাজ্য সরকার তথা শাসকদলের সঙ্গে রাজভবনের টানাপড়েন শুরু হয়। পঞ্চায়েত ভোটের সময় হিংসা ও হানাহানি নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন তো বটেই, সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানিয়ে শাসকদলের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যপালকে। ভোট মিটতেই এ বার রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন বোস। রাজভবনে ‘কন্ট্রোল রুম’ খোলা নিয়ে তাঁকে ‘বিজেপির দালাল’ বলে কটাক্ষ করেছে শাসক তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy