প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চতুর্থ দফার আনলক পর্বে শিক্ষা সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে তা এখনও তাঁর কাছে এসে পৌঁছয়নি বলে জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, এই নিয়ে রাজ্য সরকার যা নির্দেশ দেবে সেই মতো চলা হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমাদের উদ্বেগ পড়ুয়াদের নিয়ে। তবে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি রাখব।”
নির্দেশিকা তাঁর হাতে না-পৌঁছলেও ওই নির্দেশিকা সংক্রান্ত যেটুকু জানতে পেরেছেন সেই বিষয়ে পার্থবাবু বলেন, “অভিভাবকেরা লিখিত সম্মতি দিলে তবেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে আসতে পারবেন। এমন নির্দেশের অর্থ কী? কোনও অভিভাবক হয়তো অনুমতি দিলেন কোনও অভিভাবক দিলেন না। তখন কী ভাবে চলবে স্কুল? কী ভাবেই বা পঠনপাঠন হবে? শিক্ষকরা কী ভাবে আসবেন?” পার্থবাবুর মতে, বহু পড়ুয়া দূর থেকে পড়তে আসে। এখনও ট্রেন, বাস ঠিক মতো চলছে না। এর মধ্যে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি বা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পড়ুয়ারাই বা কী ভাবে আসবে?
এখনই পড়ুয়াদের স্কুলে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা বিপজ্জনক বলে মনে করছেন রাজ্য সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার। তিনি বলেন, “চতুর্থ দফার আনলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার কাজ থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের ল্যাবরেটরি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু পড়ুয়া হস্টেলে, মেসে থেকে পড়াশোনা করেন। তারা হস্টেলে বা মেসে চলে এলে যদি সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়ায় তখন তার দায়িত্ব কি কেন্দ্রীয় সরকার নেবে?” অভীকবাবুর প্রশ্ন, অভিভাবকদের লিখিত অনুমতি নিয়ে পড়ুয়ারা স্কুলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সব অভিভাবক যদি সমান সচেতন না-হন তাহলে কী হবে? অভিভাবকদের থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া বেশি জরুরি ছিল বলে মনে করেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, আনলক চতুর্থ দফায় অনলাইন ক্লাস পঞ্চাশ শতাংশ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের অনলাইন ক্লাসের সময় স্কুলে আসার অনুমতি রাজ্য দিতে পারে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষকেরা অনলাইন ক্লাসের জন্য স্কুলে এসে কী করবেন? সমস্ত স্কুলে কি অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামো আছে? হাই-স্পিড ইন্টারনেট কতগুলি স্কুলে আছে? তাহলে স্কুলে শিক্ষকদের নিয়ে এসে কী লাভ? তিনি বলেন, “আমপানের পরে এখনও সব স্কুলের পরিকাঠামো ঠিক হয়নি। এই অবস্থায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।” নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, “এত তড়িঘড়ি করে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হয়নি। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিই হোক বা উচ্চশিক্ষার পড়ুয়াদের বিপদের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অতিমারী থেকে আগে মানব সভ্যতাকে বাঁচাতে হবে। মানুষ বাঁচলে, পড়ুয়ারা বাঁচলে তবেই তো সভ্যতা বাঁচবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy