Advertisement
E-Paper

পড়ুয়াদের পিঠের যন্ত্রণা ঠেকাতে এ বার সব স্কুলেই লকার

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে এ বিষয়ে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। দফতরের এক কর্তা জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্ষেত্রে এখন স্কুলে বই রেখে যাওয়াই নিয়ম।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৯

কারও ব্যাগের ওজন ন’কিলোগ্রাম তো কারও সাত! নিত্যদিন এই বোঝা বয়ে স্কুলে যাতায়াতের ফলে অনেক পড়ুয়ার পিঠে যন্ত্রণা হচ্ছে। অনেকের ঝুলে পড়ছে কাঁধ। এর প্রতিকারে এ বার সব স্কুলে প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য পৃথক ‘লকার’ তৈরিতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। উদ্দেশ্য, পড়ুয়াদের পিঠে ব্যাগের বোঝা কমানো। প্রথম পর্যায়ে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি এবং পরবর্তী পর্যায়ে দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য শ্রেণিকক্ষে বা তার বাইরে লকার তৈরি হবে।

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে এ বিষয়ে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। দফতরের এক কর্তা জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্ষেত্রে এখন স্কুলে বই রেখে যাওয়াই নিয়ম। কিন্তু সরকারি সব প্রাথমিক স্কুলে এই সুবিধা থাকলেও সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত অধিকাংশ স্কুলে তা নেই। এ বার রাজ্যের প্রায় ৫০ হাজার প্রাথমিক স্কুল এবং ১৪ হাজারের বেশি মাধ্যমিক স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সব ক্লাসে লকার তৈরি হচ্ছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্ষেত্রে স্কুলেই বই রেখে আসতে পারবে পড়ুয়ারা। অন্য শ্রেণিতে ব্যাগ ও বই বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে। প্রয়োজনে কিছু বাড়তি বই বা খাতা লকারে রাখতে পারবে পড়ুয়ারা। কোনও দিন কোনও বিশেষ কারণে ওই লকারে ব্যাগও রেখে আসতে পারবে তারা। জলের বোতল, কোনও শুকনো খাবার বা বাড়িতে না-আনলেও হয় এমন বই-খাতাও রাখা যেতে পারে ওই লকারে।

কয়েক মাস আগেই সব ডিআই বা জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে এই বিষয়ে নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল বলে জানান স্কুলশিক্ষা দফতরের অন্য এক কর্তা। ডিআই-রা যে-সব রিপোর্ট দিয়েছেন, তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যে-সব শ্রেণিকক্ষ বড়, সেখানে লকার থাকবে শ্রেণিকক্ষেই। প্রতিটি লকারে পড়ুয়ার নাম লিখে চাবি দেওয়া হবে তাদের হাতে। তারা নিজেদের মতো ওই লকার ব্যবহার করবে। শ্রেণিকক্ষ যদি ছোট হয়, তার বাইরে লকারের বন্দোবস্ত করা হবে। তখন সেগুলিকে কী ভাবে নিরাপদে রাখা হবে, সেই নিয়ে দফতরে আলোচনা চলছে।

আরও পড়ুন: সফল বদল হৃদ্‌যন্ত্রের, আত্মবিশ্বাসী মেডিক্যাল

ব্যাগের বোঝা উত্তরোত্তর বাড়তে থাকায় পড়ুয়াদের মেরুদণ্ডে অত্যধিক চাপ পড়ে। ২০০৬ সালের কেন্দ্রীয় আইনে বলা হয়েছে, পড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন তাদের শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি হওয়া চলবে না। নার্সারি ও কিন্ডারগার্টেনের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে স্কুলব্যাগ নিষিদ্ধ। স্কুলে পড়ুয়াদের জন্য লকার রাখাও বাধ্যতামূলক। বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলে এই ব্যবস্থা থাকলেও সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলে প্রথম ও দ্বিতীয় ছাড়া কোনও ক্ষেত্রেই তা ছিল না। এ বার সেই সুবিধা মিলবে।

(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)

প্রশ্ন উঠছে, এতেই কি সমস্যা মিটবে? দফতরের এক কর্তা জানান, সরকারি স্কুলের বইয়ের ওজন বেশি নয়। কিন্তু যে-সব খাতা রোজ বাড়িতে না-নিলেও চলে, পড়ুয়ারা সেগুলি অন্তত লকারে রাখতে পারবে। জলের বড় বোতল ব্যাগের বদলে লকারে রাখা যেতে পারে। লকারে থাকতে পারে ক্যারাটে বা পিটি ক্লাসের পোশাক, পেনের বাক্সও। ‘‘পড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন কমানো এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তাই প্রথমেই বইয়ের ওজন কমানো হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী এই কাজ চলছে। পড়ুয়ারা এতে উপকৃতই হবে,’’ বলেন ওই শিক্ষাকর্তা। বঙ্গীয় শিক্ষক শিক্ষাকর্মী সমিতির তরফে স্বপন মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘লকার করে দিলেই ব্যাগের বোঝা কমে যাবে বলে মনে হয় না। বোঝা কমাতে হলে পাঠ্যক্রমকে সংক্ষিপ্ত ও মনোগ্রাহী করতে হবে।’’

Locker Student School West Bengal Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy