ফাইল চিত্র।
প্রায় সাতাশ বছর আগে বাদ গিয়েছে পিত্তথলি। কিন্তু কয়েক মাস আগে ইউএসজি পরীক্ষার রিপোর্টে বলা হল, রোগীর পিত্তথলি ভাল রয়েছে! দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেশ কিছু দিন চিকিৎসাধীন থাকা মহিলার এমন ইউএসজি রিপোর্ট দেখে অবাক রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনও। হাসপাতাল ভুল ছাপার কথা স্বীকার করলেও শুক্রবার কমিশন প্রশ্ন তুলেছে, কী করে এক জন চিকিৎসক তাতে সই করলেন। জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কিডনি-সহ আরও সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাবড়ার রীনারাণি পাল (৫৯)। কয়েক দিন চিকিৎসার পরে তিনি মারা যান। তাঁর ছেলে কমিশনে অভিযোগ দায়ের করলেও পরে জানান, হাসপাতালে উত্তরে তাঁরা সন্তুষ্ট।
তবে অভিযোগ পত্র দেখে কমিশন মনে করে হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘৫০ হাজার টাকা জরিমানা কমিশনে জমা দিতে বলা হয়েছে। আর বিলে ‘প্যাথোলজি’তে কিছু টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে। সেই বাড়তি টাকা রোগীর পরিবারকে ফেরত দিতে বলা হয়েছে।’’ আর একটি মামলায় বিদেশে থাকা তরুণী নন্দিনী দত্তের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করে কমিশন জানে, তাঁর বাবা তাপস বীর (৮৫) কলকাতায় একাই থাকতেন। দেখাশোনার জন্য একটি লোক ও আয়া ছিলেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ল্যান্সডাউনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাপসবাবু। বাড়ি আসার পরে দেখা যায়, তাঁর শরীরে কালশিটে দাগ। হাসপাতালে মারধর করা হয়েছে বলে বালিগঞ্জ থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। ডিসেম্বরে মারা যান বৃদ্ধ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, কোভিডের ক্ষেত্রে অনেক সময়েই শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে এমন দাগ হচ্ছে। সেটা ওই বৃদ্ধের হওয়ায় মলম লাগিয়ে তা সারানোও হয়েছিল। কমিশন জানতে চায়, কেন সেই দাগের কথা ছুটির তথ্যে নথিভুক্ত করা হয়নি। ভবিষ্যতে চিকিৎসার সব তথ্য ছুটির কাগজে উল্লেখ করতে বলে, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে কমিশন। আবার হাওড়ার আমতার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তী অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্থানীয় একটি নার্সিংহোমেই চিকিৎককে দেখাতেন। গত ১৪ অক্টোবর প্রসবের জন্য সেখানে ভর্তি হলে নার্স পরীক্ষা করে জানান, গর্ভস্থ শিশু পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে।
তরুণীর স্বামীর অভিযোগ, দুপুর ২টোর সময় ওটিতে নিয়ে যাওয়ার আগে ইউএসজি করে বলা হয় সন্তান মৃত। খবর পেয়েও ওই চিকিৎসক আসেননি। উল্টে এক কর্মী সাধারণ প্রসব করান। কমিশন এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তিকালীন ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক লক্ষ টাকা দিতে বলে। কিন্তু অভিযোগকারী নিতে রাজি হননি। তাই দু’সপ্তাহের মধ্যে হাওড়ার কাসুন্দিয়ার রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের অনাথ আশ্রমে সেই টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy