Advertisement
E-Paper

রাস্তা সম্প্রসারণে জমি দিতে মালিকদের বোঝাচ্ছেন কর্তারা

রাস্তা চওড়া করতে জমি প্রয়োজন। অথচ রাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি অনুযায়ী, জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। ফলে জমি মালিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে মাঠে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন সংস্থা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:৫৮
সেহরাবাজারে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।

সেহরাবাজারে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা চওড়া করতে জমি প্রয়োজন। অথচ রাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি অনুযায়ী, জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। ফলে জমি মালিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে মাঠে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন সংস্থা।

স্থানীয় পঞ্চায়েতের সাহায্যে সংস্থার কর্তারা বৈঠক করে চাষিদের রাস্তা চওড়া করার প্রয়োজন, রাস্তা চওড়া হলে এলাকায় কী কী উন্নতি হতে পারে সে সব বোঝাচ্ছেন। সরকার নির্ধারিত মূল্যে জমি দিতে ইচ্ছুক হলে বৈঠক থেকেই জেলাশাসককে উদ্দেশ্য করে সম্মতি পত্র দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনোজ অগ্রবালও জানিয়েছেন, জমির ব্যাপারে জেলাশাসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবেন।

রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রস্তাবিত ‘নর্থ-সাউথ রোড করিডর’ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের মেছোগ্রাম থেকে ঘাটাল হয়ে আরামবাগ-বর্ধমান রোড। তারপর বাদশাহী রোড ধরে মুর্শিদাবাদের কুলি-মোরগ্রাম পর্যন্ত এলাকা। মোট ২৩৮ কিলোমিটার রাস্তা সাতটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। যার মধ্যে বর্ধমান-আরামবাগ ও মেছোগ্রাম-ঘাটাল রোডের কাজ দ্রুত করতে চায় পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন সংস্থা। সেই লক্ষ্যে জমি মালিকদের কাছ থেকে দ্রুত সম্মতিপত্র আদায় করার জন্য পঞ্চায়েতের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বসে স্থানীয় বাসিন্দাদের বোঝাচ্ছেন ওই সংস্থার বাস্তুকাররা। তাঁরা চাষিদের বলেছেন, “এক মাসের মধ্যে সম্মতিপত্র জমা দিলে সরকারি নির্ধারিত দামের দেড় গুণ টাকা বেশি দিয়ে আমরা জমি কিনব। আর এক মাসের পরে সম্মতিপত্র জমা দিলে সরকারি দামের ১০ শতাংশ বেশি দিয়ে জমি কেনা হবে।” ওই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মেছোগ্রাম-ঘাটাল রোড লাগোয়া বেশ কিছু পঞ্চায়েতে এবং বর্ধমান-আরামবাগ রোডের দু’ধারে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছেন কর্তারা। ওই সংস্থার এক কর্তা বলেন, “মালিকদের বুঝিয়ে জমি পাওয়া গেলে তবেই রাস্তা চওড়া করার প্রকল্প বাস্তবে করা যাবে। তা না হলে তো প্রকল্প খাতায় কলমে থেকে যাবে।” জানা গিয়েছে, ‘নর্থ-সাউথ রোড করিডর’ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬৬৯ একর জমি লাগবে। তার মধ্যে বর্ধমান-আরামবাগ রোড চওড়া করতে ৬০ একর ও মেছোগ্রাম-ঘাটাল রোডের জন্য ১০০ একরের কাছাকাছি জমি লাগবে।

সড়ক উন্নয়ন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এশিয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের টাকায় এই রাস্তা চার লেনের তৈরি হবে। রাস্তা তৈরি হলে হলদিয়া বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়বে। পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যাো বেড়ে যাবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিরও সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ কয়েক দিন ধরে ওই সংস্থার সহ বাস্তুকার অতনু দাস স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তাদের নিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি বলেন, “আমরা কোনও ভাবেই জোর করে জমি নেব না। আগে জানতে চাই চাষিরা জমি দিতে ইচ্ছুক কি না। চাষিরা জমি দিতে ইচ্ছুক হলে প্রকল্প অনুমোদন করবে রাজ্য মন্ত্রিসভা। তারপর সংস্থার আরও কর্তারা এলাকায় এসে চাষিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন।” তিনি আরও জানিয়েছেন, রাস্তার মধ্যে থেকে দু’দিকে ৭৫ ফুট পর্যন্ত পর্যন্ত জমি নেওয়ার কথা প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে। সেই মত রাস্তার মানচিত্রও তৈরি করা হয়েছে। কোন কোন দাগের জমি পড়ছে তার বিস্তারিত তালিকা পঞ্চায়েতের কাছে থাকবে।

ওই রাস্তার ধারে জমি রয়েছে রায়নার ছাতিমপুরের শেখ মুজিবর রহমান, গোলামবারির বিনয় রক্ষিত, খণ্ডঘোষের সগরাইয়ের উমাপদ সাঁতরাদের। তাঁরা জানান, রাস্তা চওড়া করার জন্য জমি দিতে রাজি তাঁরা। অনেকে বৈঠক থেকে সম্মতিপত্রও নিয়ে গিয়েছেন। পরে তাঁরা তা পঞ্চায়েত দফতরে জমা দিয়েছেন। সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, ওই সম্মতিপত্রে জমির মালিকদের সমস্যার কথা লিখে জানাতে বলা হয়েছে। যাতে উচ্চপর্যায়ে বৈঠক করে সমাধান বের করা যায়। প্রয়োজনে সরাসরি ওই জমির মালিকের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন কর্তারা। রাস্তা চওড়া করতে গেলে ওই জমিতে রায়নার বেশ কিছু চালকল ও বাড়ি পড়তে পারে বলে জানা গিয়েছে। সে ক্ষেত্রেও সরকারের সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও বাস্তব পরিস্থিতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) বলেন, “গত ২ ডিসেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জমির মালিকদে সচেতন করার কাজ চলেছে। তাতেই প্রচুর জমির মালিক সম্মতিপত্র আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। ভাল সাড়াই মিলছে।”

state highway authority negotiation seherabazar land acquisition
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy